হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে অক্ষরের দিল্লির কাছে ১ উইকেটে হার পন্থের লখনউয়ের, চিন্তা থাকল ২৭ কোটির ঋষভকে নিয়ে

আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ ঋষভ পন্থ। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে তাঁর লখনউ সুপার জায়ান্টসও হেরে গেল দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে। অক্ষর পটেলের দলের জয়ের নায়ক ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা আশুতোষ শর্মা। তিনিই দিল্লির জয়ের নায়ক। প্রথম ব্যাট করে লখনউ করে ৮ উইকেটে ২০৯ রান। জবাবে দিল্লি ১৯.৩ ওভারে ৯ উইকেটে করল ২১১ রান। চিন্তা থাকল উইকেটরক্ষক পন্থকে নিয়েও। ম্যাচের শেষ ওভারে মোহিত শর্মাকে স্টাম্পড আউট করার সহজ সুযোগ পন্থ হাতছাড়া না করলে তাঁর দল জিতেই মাঠ ছাড়তে পারত।

জয়ের জন্য ২১০ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয় হয় দিল্লির। শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার জেক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক (১)। পর পর সাজঘরে ফেরেন অভিষেক পোড়েল (শূন্য), সমীর রিজ়ভি (৪)। ৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দিল্লির ইনিংস। সেই পরিস্থিতি অক্ষর এবং ওপেনার ফ্যাফ ডুপ্লেসি খানিকটা রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়কের জুটিতে ওঠে ৪৩ রান। তবে তাঁরাও দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে পারলেন না। ডুপ্লেসি ১৮ বলে ২৯ করলেন ৩টি চার এবং ২টি ছয়ের সাহায্যে। অক্ষরের ব্যাট থেকে এল ১১ বলে ২২ রানের ইনিংস। ৩টি চার, ১টি ছক্কা মারলেন।

৬৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন স্ট্রিস্টান স্টাবস এবং আশুতোষ শর্মা। স্টাবস করলেন ২২ বলে ৩৪। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১টি চার এবং ৩টি ছক্কা। শেষ দিকে অভিষেকের সঙ্গে মরিয়া লড়াই করলেন ভিপরাজ নিগম। তাঁদের আগ্রাসী ব্যাটিং কিছুটা চাপে ফেলে দেয় পন্থদের। ভিপরাজ ১৫ বলে ৩৯ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে আউট হন। ৫টি চার এবং ২টি ছক্কা মারেন। স্টার্ক (২) ব্যাট হাতে পারলেন না। তবে হাল ছাড়েননি আশুতোষ। তিনি ৩১ বলে অপরাজিত ৬৬ রান করলেন। মারলেন ৫টি করে চার এবং ছয়। তাঁর ব্যাটেই জয় এল শেষ পর্যন্ত।

ব্যাট হাতে না পারলেও বল হাতে দলকে ভরসা দিলেন শার্দূল। ম্যাকগর্ক এবং পোড়েলকে হারিয়ে দিল্লির ইনিংসকে তিনিই চাপে ফেলে দেন। তাতে লাভ হল না। তিনি ছাড়াও ২ উইকেট করে নিলেন এম সিদ্ধার্থ, রবি বিশ্নোই এবং দ্বিগ্বেশ রাঠি।

আইপিএলের চতুর্থ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি অধিনায়ক অক্ষর। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও শুরুটা ভাল করতে পারেননি লখনউয়ের ব্যাটারেরা। ওপেনার এডেন মার্করাম ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হয়ে যান। ৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন অন্য ওপেনার মিচেল মার্শ এবং তিন নম্বরে নামা নিকোলাস পুরান। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার ৩৬ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলেন। মারেন ৬টি করে চার এবং ছক্কা। ক্যারিবিয়ান ব্যাটারের ব্যাট থেকে এল ৩০ বলে ৭৫ রানের ইনিংস। পুরান মারলেন ৬টি চার এবং ৭টি ছয়। তাঁদের দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে উঠল ৭ ওভারে ৮৭ রান।

তাঁরা দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিলেও লখনউয়ের অন্য ব্যাটারেরা দলের রানকে প্রতিপক্ষের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যেতে পারলেন না। চার নম্বরে নেমে পন্থ ছ’টি বল খেলেও রান করতে পারলেন না। পর পর দু’উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় লখনউয়ের ইনিংস। ডেভিড মিলার, আয়ুষ বাদোনিরা নিজেদের ইনিংস শুরু করলেন কিছুটা সাবধানি হয়ে। তাতে রান তোলার গতি অনেকটা কমে গেল লখনউয়ের। লাভের লাভ কিছু হল না। বাদোনি (৪) রান পেলেন না। প্রথম ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগে সই করানো শার্দূল ঠাকুরও (শূন্য) ব্যর্থ হলেন। একটা সময় ১ উইকেটে ১৩৩ রান করা লখনউ পাঁচ ওভারের ব্যবধানে ৬ উইকেটে ১৭৭ হয়ে যায়। ২২ গজে সঙ্গীর অভাবে মিলারও তেমন আগ্রাসী হতে পারলেন না। রান পেলেন না বাংলার শাহবাজ় আহমেদও (৯)। ব্যর্থ বিশ্নোইও (শূন্য)। ১৯ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকলেন মিলার। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১ চার এবং ২টি ছয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন দ্বিগ্বেশ (অপরাজিত শূন্য)।

দিল্লির সফলতম বোলার কলকাতা নাইট রাইডার্সের ছেড়ে দেওয়া মিচেল স্টার্ক। ৪২ রান ৩ উইকেট নিলেন তিনি। ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন কুলদীপ যাদব। বাংলার মুকেশ কুমার ২২ রানে ১ উইকেট নিলেন। ৩৫ রান খরচ করে ১ উইকেট ভিপরাজের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.