পায়ের হাড় ভেঙেছে, ছ’সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার সম্ভাবনা পন্থের, ইংল্যান্ড সিরিজ় থেকেই বাদ?

আশঙ্কাই সত্যি হল। ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ে আর হয়তো দেখা যাবে না ঋষভ পন্থকে। তাঁর পায়ের হাড় ভেঙেছে। ফলে ছ’সপ্তাহের জন্য পন্থকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। চতুর্থ টেস্ট তো বটেই, পঞ্চম টেস্টেও পন্থকে খেলতে দেখা যাবে না। পন্থের না-থাকা নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য বড় ধাক্কা। ব্যাটিং তো বটেই, উইকেটকিপিংয়েও তাঁর বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন।

বোর্ড আপাতত চেষ্টা করছে কোনও ভাবে যাতে পন্থকে ব্যথার ওষুধ খাইয়ে অন্তত ব্যাট করতে নামানো যায়। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ ওয়েবসাইটে বোর্ডের এক সূত্র বলেছেন, “স্ক্যান রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, পন্থের পায়ে চিড় ধরেছে। ছ’সপ্তাহের জন্য ওকে পাওয়া যাবে না। চিকিৎসকেরা চেষ্টা করছেন যাতে ব্যথার ওষুধ খাইয়ে ওকে ব্যাট করতে নামানো যায়। এখনও হাঁটাচলার জন্য কারও কাঁধে ভর দিতে হচ্ছে ওকে। ব্যাটিংয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।”

পন্থ যদি একান্তই এই টেস্টে ব্যাট করতে না পারেন, তা হলে একজন কম নিয়েই খেলতে হবে ভারতকে। সে ক্ষেত্রে মাত্র ১০ জন ব্যাট করার সুযোগ পাবেন। উইকেটকিপিংয়ের ভার সামলে দেবেন ধ্রুব জুরেল।

পন্থ চোট পাওয়ার পর রবি শাস্ত্রী বলেন, “ওর যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখটা দেখে খুব খারাপ লাগছে। এমনিতেই একটা চোট পুরোপুরি সারেনি। তার উপর আবার চোট পেল। এই যন্ত্রণা আরও বাড়তে পারে। সকালে উঠলে পায়ের পাতা আরও ফুলে যেতে পারে। সে আপনি যতই বরফ লাগান না কেন। নিশ্চয়ই গোটা রাত ও বরফ লাগিয়েছে। প্রার্থনা করি যেন হাড় না ভাঙে।”

শাস্ত্রী আরও বলেন, “গাড়ি দুর্ঘটনার মতো অত বড় ধাক্কা কাটিয়েও মাঠে ফিরেছে পন্থ। কিন্তু চোট পেয়ে সাজঘরে ফেরার সময় ওর মুখটা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কতটা ব্যথা করছে। আশা করি দ্রুত মাঠে ফিরবে।”

উদ্বিগ্ন রিকি পন্টিংও। তিনিই প্রথম মেটাটারসাল চোটের সম্ভাবনার কথা বলেন। পন্টিংয়ের কথায়, “মাটিতে পা ফেলতেই পারছিল না। গল্‌ফ কার্ট আসার আগে মাটিতেই ৬-৮ মিনিট গড়াগড়ি খেয়েছে। প্রথম ফোলাটা দেখে বেশ চিন্তিত। আমি নিজে মেটাটারসালে চোট পেয়েছিলাম। ছোট ছোট হাড় ভেঙে গেলে খুব মুশকিল।”

তিনি আরও বলেন, “পায়ে একটুও চাপ দিতে না পারার বিষয়টাই চিন্তার। যদি হাড় ভেঙে যায় তা হলে নিশ্চিত ভাবেই এই ম্যাচ থেকে ছিটকে যাবে। তবে না ভাঙলে পন্থকে ম্যাচে ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা করবে ভারত। আশা করি আর রিভার্স সুইপ মারবে না।”

ইনিংসের ৭৮তম ওভারে ডান পায়ে চোট পান পন্থ। দেখা যায় তাঁর পা ফুলে গিয়েছে এবং বড় ক্ষত তৈরি হয়েছে। ডান পা ফেলতেই পারছিলেন না পন্থ। স্ট্রেচারে করে তাঁকে যখন মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন দেখেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি কতটা যন্ত্রণা অনুভব করছিলেন।

ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকস একটি ইয়র্কার বল করেন। পন্থ বলের দিকে না তাকিয়ে সুইপ করতে যান। বল ব্যাটে লেগে পন্থের ডান পায়ের গোড়ালির ঠিক নীচে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে পন্থ যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন। ফিজিয়ো মাঠে চলে আসেন। কিন্তু পন্থের ব্যথা কমেনি। দেখা যায়, তাঁর ডান পায়ে ক্ষত ছাড়াও রক্তের দাগও রয়েছে। তাঁকে ক্যাবি অ্যাম্বুল্যান্সে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

তৃতীয় টেস্টেও প্রথম দিন চোট পেয়েছিলেন পন্থ। লর্ডসে উইকেট কিপিং করার সময় একটি বল তাঁর হাতে লাগে। আঙুলে চোট পেয়ে সেই ম্যাচে আর উইকেট কিপিং করতে পারেননি তিনি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেছিলেন। কিন্তু এ বার দেখে মনে হয়েছে পন্থের চোট অনেক বেশি গুরুতর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.