বিশ্বকাপের জন্য দল চিনছি, এশিয়া কাপে পর পর দু’বার হেরে সাফাই রোহিত শর্মার

মরণ-বাঁচন ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গিয়ে এশিয়া কাপ থেকে কার্যত বিদায় নিয়েছে ভারত। বুধবার পাকিস্তান জিতলে বিদায় হয়ে যাবে তাদের। রোহিত শর্মাদের দল নির্বাচন বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বল না করা সত্ত্বেও কেন দলে দীপক হুডা, কেন ঋষভ পন্থের জায়গায় দীনেশ কার্তিক, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে রোহিত জানালেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তাঁরা ইচ্ছে করেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হেঁটেছেন। এটাও মেনে নিলেন, এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া বাকি।

ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে রোহিত বলেছেন, “বিশ্বকাপের দল ৯০-৯৫ শতাংশ তৈরি। কিছু ছোটখাটো বদল হবেই। ইচ্ছে করেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। এশিয়া কাপের আগেই ঠিক করেছিলাম। চার জন জোরে বোলার এবং দু’জন স্পিনার নিয়েই খেলার পরিকল্পনা রয়েছে। তবু আমি দেখতে চেয়েছিলাম, তিন জন জোরে বোলার খেলালে কী হতে পারে। তৃতীয় স্পিনার যে হবে, সে যেন অলরাউন্ডার হয়।”

রোহিত যোগ করেছেন, “ভাল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই নিজেদের পরীক্ষার মধ্যে ফেলতে হবে। এখানে চতুর্থ জোরে বোলার যে ছিল (আবেশ খান), তাকে অসুস্থতার কারণে দলে নেওয়া যায়নি। আগের ম্যাচগুলোতে অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি। এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া বাকি। কখনওই বলতে পারি না যে নির্দিষ্ট একটা দল নিয়ে আমরা খেলব। এর পরে দুটো সিরিজ রয়েছে। তার পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। জানি না কবে দল ঘোষণা হবে। যত দিন না সেটা হচ্ছে, তত দিন নতুন নতুন ক্রিকেটার খেলিয়ে যাব।”

সমর্থক এবং ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন হলেও রোহিত আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, “দুটো ম্যাচ হেরেছি মানে বিরাট চিন্তায় পড়ে গিয়েছি, সেটা একেবারেই নয়। সাজঘরে হার নিয়ে কোনও নেতিবাচক কথা হয় না। গত বারের বিশ্বকাপের পর ভাল খেলেছি এবং জিতেছি। তবে এ রকম সময় আসতেই পারে। অভিজ্ঞ বোলাররাও অনেক সময় মার খেয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্রিকেটারই অনেক দিন ধরে খেলছে। এত দিন ধরে ম্যাচ জিতিয়েছে। মাঝে মাঝে এ রকম হয়ে যায়।”

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কোথায় ভুল হল? রোহিতের ব্যাখ্যা, প্রথম ছ’ওভারে যতটা রান করা দরকার ছিল, ততটা করতে পারেননি। কারণ একের পর এক উইকেট হারাতে হয়েছে। তার পরে যে সুযোগগুলি পেয়েছেন, সেগুলি আরও বেশি কাজে লাগানো দরকার ছিল। রোহিতের কথায়, “সপ্তম ওভার থেকে পরের আরও অন্তত আটটা ওভারে বেশি রান করা দরকার ছিল। সেটা আমরা পারিনি। মনে করে দেখুন, আগে শেষের দিকের ওভারগুলোয় আমরা কত ভাল খেলেছি। মাঝের ওভারেও দাপট দেখিয়েছি। তবে অনেক সময় পরিকল্পনা কাজে লাগে না। যেটা চাইছি সেটা হয় না। আমার মনে হয়েছে, ১০-১২ রান কম করেছি। ১৭০ ভালই স্কোর ছিল। এমন নয় যে কম রান, অনায়াসে তাড়া করা যাবে। বোলিং করার সময় শুরুটা ভাল করলে এবং মাঝের ওভারে উইকেট নিলে জেতার একটা সুযোগ থাকত। তবে ওদের ওপেনিং জুটিই সব শেষ করে দিল। ওটাই ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। বিনা উইকেটে ৯০ রান তুলে দেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। ১০ ওভার হয়ে গিয়েছে তত ক্ষণে। প্রচণ্ড চেষ্টা করেছিলাম উইকেট নেওয়ার। কিন্তু পরিকল্পনা সঠিক ভাবে কাজে লাগেনি।”

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারত ভাল খেললেও কেন এ ভাবে বড় প্রতিযোগিতায় এসে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়? রোহিতের উত্তর, “এ ধরনের প্রতিযোগিতায় আলাদা আলাদা দলের বিরুদ্ধে আমরা খেলি। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে একটাই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে হয়। সেখানে তাদের শক্তি-দুর্বলতা ভাল ভাবে বোঝা যায়। কিন্তু এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপে বিভিন্ন দল বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আসে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, বিপক্ষের থেকে এক ধাপ এগিয়ে ভাবা। তা হলেই জিততে পারব। আগেও তো আমরা সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলেছি। ট্রফিও জিতেছি। এত ভাবার দরকার নেই। চাপ আছে, কিন্তু সেটা কাটানোর উপায়ও আছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.