হারলে দোষ শুধু অধিনায়কের নয়, বলছেন শাদাব

ইংল্যান্ডের কাছে শনিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে পাকিস্তান। রবিবার কলকাতা থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিলেন বাবার আজ়ম, শাদাব খানরা। একমাত্র হাসান আলি থেকে গেলেন ভারতে। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি হরিয়ানায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ছুটি কাটাবেন।

অন্য দিকে রবিবারই দুবাই থেকে লাহোরের উদ্দেশে রওনা দেবেন বাবররা। ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ ভাল যায়নি পাক অধিনায়কের। খুব সম্ভবত এক দিনের ক্রিকেটের অধিনায়ক হিসেবে ভারতের মাটিতেই শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন তিনি। পাক ক্রিকেটমহলে ইতিমধ্যেই নতুন অধিনায়ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, নেতৃত্বের বোঝা ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে বাবরের। এ বারের বিশ্বকাপে একটিও শতরান পাননি পাক অধিনায়ক। পুল শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন চার বার। নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও রক্ষণাত্মক মনোভাব দেখিয়েছেন। কিন্তু তাঁর পাশে দাঁড়ালেন দলের অলরাউন্ডার শাদাব খান।

শনিবার ম্যাচ শেষে মিক্সড জ়োনে সাংবাদিকদের শাদাব বলেন, ‘‘দল জিতলে সকলে বলেন অধিনায়কের জন্য জিতেছে। হারলে সব দোষ হয়ে যায় অধিনায়কের। এই সংস্কৃতি পাল্টানো উচিত। আমরা দল হিসেবেই যেমন জিতি, তেমনই দল হিসেবেই হারি। কোনও এক জনের জন্য দল হারতে পারে না।’’

বিষণ্ণ: শনিবার ইডেনে হারের পরে মাথায় হাত শাহিনের। 

বাবরের পাশে দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তানের টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থারও। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘বাবর তরুণ। ওর পাশে আমাদের সকলেরই দাঁড়ানো উচিত।’’ যোগ করেন, ‘‘ও সব সময়ই শিখছে। আমরা জানি ও কত বড় ব্যাটসম্যান। নেতৃত্বের শিক্ষাও ধীরে ধীরে পাচ্ছে ও। বাবরকে তৈরি হওয়ার আরও সময় দেওয়া উচিত। ভুল করতেই পারে। তা মানিয়ে নেওয়ার দায়িত্বও আমাদের। বাইরে থেকে অনেকেই অনেক কিছু বলবেন। কিন্তু তাতে প্রভাবিত হলে চলবে না।’’

পাকিস্তানকে সব চেয়ে ধাক্কা দিয়েছে তাদের বোলিং ও ফিল্ডিং। নাসিম শাহ প্রতিযোগিতার শুরুতেই চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় বড় ধাক্কা খেয়েছে পাক শিবির। সেই সঙ্গেই ভারতের মাটিতে স্পিনারদের ব্যর্থতা আরও বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় পাকিস্তানের। ছ’ম্যাচে মাত্র দু’টি উইকেট পেয়েছেন শাদাব খান। তিনিই দলের মূল স্পিনার হিসেবে ভারতে এসেছিলেন। শাদাব বলছিলেন, ‘‘আমি একেবারেই ভাল বোলিং করতে পারিনি। দক্ষতা অনুযায়ী নিজেকে মেলে ধরতে পারিনি। আমার ব্যর্থতার জন্য দল অনেক ম্যাচ জিততে পারেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতা জেতার লক্ষ্য নিয়েই সব দল আসে। আমাদেরও সেই লক্ষ্যই ছিল। কিন্তু কী আর করা যাবে। চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারিনি।’’

ফিল্ডিং নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাক অলরাউন্ডার। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক ম্যাচেই ক্যাচ পড়েছে। সহজে কোনও জুটি ভাঙতে পারিনি আমরা। ব্যাটিংয়েও জুটি গড়তে পারিনি। বড় রান তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। আসলে ভারতে আগে কখনও খেলিনি। এখানে এক রকমের কোনও পিচ নেই। বিভিন্ন রাজ্যের পরিবেশ বিভিন্ন রকম। কোথাও দ্রুত বল ব্যাটে আসে। কোথাও থমকে আসে। পরিবেশ বুঝতে বুঝতেই বেশ কয়েকটি ম্যাচ চলে গিয়েছে।’’

পাক স্পিনারদের ব্যর্থতার দিনে সফল ইংল্যান্ডের লেগস্পিনার আদিল রশিদ। মিক্সড জ়োনে এসে তিনি বলছিলেন, ‘‘ইডেনে গুগলিতে উইকেট পেয়েছি। বল গ্রিপ করছিল। তাই সাহস করে গুগলি দিতে পেরেছি।’’ রশিদ জানিয়ে গেলেন, দল চাইলে তিনি এখনও এক দিনের ক্রিকেট খেলে যেতে পারেন। তাঁর কথায়, ‘‘অবসর নেওয়ার মতো সময় আসেনি। দল যদি চায়, আমি খেলে যেতে রাজি। ভবিষ্যৎ নিয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু ভাবিনি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.