বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৫। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৬। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৯। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’টি অর্ধশতরান হয়ে গেল শ্রেয়স আয়ারের। রবিবার নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর একটু ধৈর্য দেখাতে পারলে শতরানও আসতে পারত। অথচ, বছরখানেক আগে এই শ্রেয়সকেই ‘অবাধ্য’ বলেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। সেই কঠিন সময়ে তিনি সকলকে পাশে পাননি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দেশের হয়ে ভাল খেললেও অভিমান দূর হচ্ছে না ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটারের।
ভারতের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপে খেলেছিলেন শ্রেয়স। তার পর বোর্ড নির্দেশ দিয়েছিল, ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। কিন্তু শ্রেয়স ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলে তাঁর তৎকালীন আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্-মরসুম শিবিরে যোগ দেন। ফলে ২০২৩-২৪ সালে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েন তিনি। দল থেকেও বাদ পড়েন। পরে অবশ্য ফিরেছেন। নিজের জায়গা পাকা করেছেন। কিন্তু সেই সময়টা কঠিন ছিল তাঁর। সে কথা জানিয়েছেন শ্রেয়স। নিউ জ়িল্যান্ড ম্যাচের পর তিনি বলেন, “কয়েকটা মাস আমার খুব খারাপ গিয়েছিল। তখন সকলকে পাশে পাইনি। খুব কম লোককেই পাশে পেয়েছিলাম। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, নিজেকেই লড়তে হবে।” শ্রেয়সের কথা থেকে স্পষ্ট, এখনও অভিমান যায়নি তাঁর।
নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শ্রেয়স। সেই সময় তাঁর মানসিকতা কী ছিল সেই কথাও জানিয়েছেন শ্রেয়স। তিনি বলেন, “ক্রিজ়ে অনেক ক্ষণ ছিলাম। হাত জমে গিয়েছিল। জানতাম, ক্রিজ়ে থাকলে রান আসবে। শুরুতে একটু ধীরে খেলেছি। যত সময় গড়িয়েছে হাত খুলেছি। ভেবেছিলাম, শেষ পর্যন্ত খেলব। কিন্তু খারাপ শট খেলে আউট হয়ে গেলাম। সেটাই খারাপ লাগছে।”
ভারতের হয়ে এই ম্যাচে খেলেছেন বরুণ চক্রবর্তী। পাঁচ উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। কিন্তু বরুণ যে এই ম্যাচে খেলবেন, তা আগে বুঝতে পারেননি শ্রেয়স। তিনি বলেন, “আমি জানতাম না বরুণ খেলবে। অনুশীলনের সময় শুনতে পাচ্ছিলাম, এক জন অতিরিক্ত স্পিনার খেলানো হতে পারে। কিন্তু কাকে খেলানো হবে তা জানতাম না। দল নির্বাচনের দায়িত্ব গম্ভীর ভাই ও রোহিত ভাইয়ের। ওরা বুঝিয়ে দিয়েছে যে বরুণকে খেলিয়ে ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।”
গত মরসুমে আইপিএলে বরুণ ছিলেন শ্রেয়সের বড় অস্ত্র। কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করতে বরুণ বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেই বোলারের সাফল্যে খুশি শ্রেয়স। তিনি বলেন, “বরুণ অনেক উন্নতি করেছে। ওকে খেলা কঠিন। বিশেষ করে দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে ও আরও ভয়ঙ্কর। বরুণ বুঝিয়ে দিয়েছে, সেরা ফর্মে থাকলে ওকে খেলা প্রায় অসম্ভব।” এ বার সামনে সেমিফাইনাল। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালের বদলা নিতে চায় ভারত। সেই লক্ষ্যেই প্রস্তুতি সারবেন শ্রেয়সরা।