পিছিয়ে পড়েও জর্জিয়াকে চার গোল, কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের সামনে এ বার জার্মানি

ইউরো কাপ যত এগোচ্ছে, তত বিধ্বংসী হয়ে উঠছে স্পেন। রবিবার ইউরো কাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জর্জিয়া তারা হারিয়ে দিল ৪-১ গোলে। তা-ও আবার এক গোলে পিছিয়ে পড়ে। পর্তুগালকে হারানো এবং ইউরো আবির্ভাবেই নকআউটে ওঠা জর্জিয়ার স্বপ্নের দৌড় শেষ হয়ে গেল। স্পেনের হয়ে গোল করলেন রদ্রি, ফ্যাবিয়ান রুইজ, নিকো উইলিয়ামস এবং দানি ওলমো। জর্জিয়ার একমাত্র গোল রবিন লে নরমাঁর আত্মঘাতী। কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেন খেলবে আয়োজক দেশ জার্মানির বিরুদ্ধে।

ম্যাচের শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্পেনের পায়ে। প্রথম দিকেই সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন আলভারো মোরাতা এবং রুইজ। কিন্তু জর্জিয়া মরিয়া হয়ে রক্ষণ সামাল দিচ্ছিল। ৬ মিনিটেই কর্নার থেকে দানি কার্ভাহালের শট বাঁচিয়ে দেন জর্জিয়া গোলকিপার জিয়োর্জি মামাদাশভিলি।

তবে জর্জিয়া ছেড়ে কথা বলার পাত্র ছিল না। তারা সব সময়েই অপেক্ষা করছিল প্রতি আক্রমণের। স্পেনের কোনও খেলোয়াড় বল হারালেই জর্জিয়া দ্রুতগতিতে আক্রমণে উঠছিল। সেটা করতে গিয়েই গোল পেয়ে যায় তারা। ১৮ মিনিটের মাথায় ডান দিকে বল পেয়েছিলেন খাভিচা কাভারৎস্কেলিয়া। তিনি বক্সে বল ভাসিয়েছিলেন। স্পেনের দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে তা যাচ্ছিল জর্জিয়ারই এক খেলোয়াড়ের কাছে। তার আগেই এগিয়ে এসে স্পেনের রবিন লে নরমাঁ আটকাতে যান। বল তাঁর পেটে লেগে নিজেদের গোলেই ঢুকে যায়। গোলকিপার উনাই সিমনের কিছু করার ছিল না। ইউরো কাপ দেখতে পায় আরও একটি আত্মঘাতী গোল।

গোল খেয়ে গেলেও বল ঘোরাফেরা করতে থাকে স্পেনের ফুটবলারদের পায়েই। ম্যাচের ২৭ মিনিটের মাথায় একটি পরিসংখ্যান দেখানো হয়। দেখা যায় জর্জিয়া মাত্র ৪২টি পাস খেলেছে। সেখানে স্পেন খেলেছে ২৩৮টি। বল পজেশন স্পেনের পক্ষে ৭৮-২২। গোটা খেলাটাই হতে থাকে জর্জিয়ার অর্ধে।

চাপ বজায় রাখার সুফল পায় স্পেন। ৩৯ মিনিটে সমতা ফেরায় তারা। বাঁ দিকে বল পেয়েছিলেন নিকো উইলিয়ামস। তিনি জর্জিয়ার রক্ষণ চিরে পাস দেন বক্সের বাইরে থাকা রদ্রিকে। রিসিভ করেই বাঁ পায়ে গড়ানো শটে বল জালে জড়ান।

দ্বিতীয়ার্ধেও স্পেনের খেলায় বদল হয়নি। শুরু থেকে আক্রমণ করতে থাকে তারা। লুই দে লা ফুয়েন্তের দল তিকিতাকার পাশাপাশি প্রেসিং ফুটবল খেলে অভ্যস্ত। জর্জিয়ার বিরুদ্ধে সেই কৌশল নিয়ে নামলেও গোলমুখ খুলতে পারছিল না। সেই সুযোগ আসে ৫০ মিনিটে। বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল স্পেন। লেমিনে ইয়ামালের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দেন মামাদাশভিলি। সেই বল ঘুরে আসে ইয়ামালের পায়ে। এ বার তাঁর নিখুঁত ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন রুইজ।

ভাবা হয়েছিল গোল খেয়ে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াবে জর্জিয়া। সেই সুযোগও কয়েক বার তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু আগ্রাসী স্পেনের সামনে কোনও ধরনের কৌশলই কাজে দেয়নি। উল্টে খেলা যত এগোতে থাকে স্পেনের আক্রমণ ততই ধারালো হতে থাকে। ৭৫ মিনিটে গোল করেন নিকো উইলিয়ামস। গোল শোধ করার লক্ষ্যে জর্জিয়ার প্রায় গোটা দলই উঠে গিয়েছিল স্পেনের অর্ধে। নিজেদের পেনাল্টি বক্সের বাইরে বল পেয়ে উইলিয়ামসকে বল বাড়িয়েছিলেন রুইজ। একাই সেই বল টেনে নিয়ে গোল করেন উইলিয়ামস।

মিনিট দশেক পরে চতুর্থ গোল করে স্পেন। নিজেদের অর্ধে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি জর্জিয়ার ডিফেন্ডারেরা। সেই বল ঠিক বক্সের বাইরে গিয়ে পড়ে দানি ওলমোর পায়ে। নিচু শটে গোল করেন স্পেনের ফুটবলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.