বিশ্বকাপে প্রথম দু’টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হারতেই বিশ্বকাপ থেকে তাদের ছিটকে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু প্যাট কামিন্সের দল ফিরে এসেছে। টানা আটটি ম্যাচে জিতে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল কামিন্সদের। আবার সেই দলের বিরুদ্ধেই খেলবেন তাঁরা। কোন এগারো জনকে নিয়ে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে নামতে পারে অস্ট্রেলিয়া?
ডেভিড ওয়ার্নার: অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ওপেনার এ বারের বিশ্বকাপে ১০ ম্যাচে ৪৯১ রান করেছেন। দু’টি শতরান রয়েছে তাঁর। গড় ৫২.৮০। এমন ওপেনারকে বসিয়ে রাখার কোনও প্রশ্নই নেই। বাঁহাতি ওপেনার তাই রবিবার ভারতের অবশ্যই খেলবেন।
ট্রেভিস হেড: চোটের কারণে বিশ্বকাপের শুরুর দিকের বেশ কিছু ম্যাচে খেলতে পারেননি। পাঁচ ম্যাচে করেছেন ১৯২ রান। একটি শতরানও রয়েছে। তাঁর স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪০। ভারতের বিরুদ্ধে শুরুতেই ঝড় তুলতে বড় ভরসা হেড। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে বলও করতে পারেন তিনি।
মিচেল মার্শ: যত দিন হেড খেলতে পারছিলেন না, তত দিন ওপেন করছিলেন মার্শ। ৯ ম্যাচে ৩৯৫ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার। দু’টি শতরান করেছেন তিনি। এমনই ফর্মে রয়েছেন যে, স্টিভ স্মিথকে চার নম্বরে ব্যাট করতে হচ্ছে।
স্টিভ স্মিথ: অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করেন তিনি। কিন্তু ওয়ার্নার, হেড এবং মার্শ এমন ফর্মে রয়েছেন যে, তাঁকে নিজের জায়গা ছাড়তে হয়েছে। চার নম্বরে নামবেন স্মিথ। ৯ ম্যাচে ২৯৮ রান করা অসি ব্যাটার এ বারের বিশ্বকাপে তেমন ফর্মে নেই। অর্ধশতরান করেছেন মাত্র দু’টি। তবুও স্মিথের মতো ব্যাটারকে ফাইনালে বসিয়ে রাখার কোনও প্রশ্ন নেই।
মার্নাস লাবুশেন: এক দিনের দলে একটা সময় জায়গাই হত না তাঁর। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে এমন রান করলেন যে, তাঁকে বিশ্বকাপের দলে জায়গা দিতে বাধ্য হল অস্ট্রেলিয়া। ১০ ম্যাচে ৩০৪ রান করেন লাবুশেন। দু’টি অর্ধশতরান করেছেন। মিডল অর্ডারে দলের বড় ভরসা তিনি।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল: এ বারের বিশ্বকাপে ২০১ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। একার হাতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। তাঁর ১২৮ বলে ২০১ রানের ইনিংস না থাকলে হয়তো সেমিফাইনালে ওঠা সমস্যা হত অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাক্সওয়েল সব সময়ই ভয়ঙ্কর। সঙ্গে রয়েছে তাঁর বোলিং। ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার বড় ভরসা হতে পারেন ম্যাক্সওয়েল।
জস ইংলিস: দলের উইকেটরক্ষক ইংলিস। প্রয়োজনে ব্যাট হাতে দলের ভরসা হতে পারেন। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২৮ রান করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ফাইনালেও তাঁর থেকে এমন ইনিংস চাইবে দল।
মিচেল স্টার্ক: এ বারের বিশ্বকাপ খুব একটা ভাল যায়নি অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসারের। ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। কিন্তু অভিজ্ঞতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বড় ভরসা তিনি। ফাইনালে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের সমস্যায় ফেলতে স্টার্ক দলের বড় অস্ত্র।
প্যাট কামিন্স: অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বোলার যিনি, বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ১০ ম্যাচে ১৩ উইকেট নেওয়া এই পেসারকেও যে খুব ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে এমন নয়। কিন্তু তাঁরও অভিজ্ঞতা প্রচুর। স্টার্ক এবং কামিন্সের জুটি যে কোনও দলের ব্যাটারদের কাছেই ত্রাস হতে পারে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক চাইবেন বল হাতে দলকে আরও একটু বেশি ভরসা দিতে।
অ্যাডাম জাম্পা: অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র স্পিনার তিনি। বিশ্বকাপে আর কোনও স্পিনার না নিয়ে আসার জন্য সমালোচনা হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু জাম্পা একাই ২২ উইকেট নিয়ে সেই অভাব ঢেকে দিয়েছেন। তাই জাম্পাকে ফাইনালে অবশ্যই দেখা যাবে।
জস হেজ়লউড: কামিন্স এবং স্টার্ক থাকলেও দলের সব থেকে ভয়ঙ্কর পেসার এখন হেজ়লউডকেই মনে হচ্ছে। ১৪ উইকেট নেওয়া ডানহাতি পেসারের গতি রয়েছে। সঙ্গে বল সুইং করানোর ক্ষমতাও রয়েছে তাঁর। বিশ্বকাপের ফাইনালে তাই হেজ়লউডকেও সামলে খেলতে হবে বিরাটদের।