দেবশ্রী চৌধুরী কী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন? জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আজ, বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের আগেই খবর ছড়িয়ে পড়ল, দেবশ্রীকে তাঁর মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে রায়গঞ্জের সাংসদ জানান, তাঁর কাছে তেমন কোনও খবর নেই। বলেই ফোনের লাইনটি কেটে দেন। এই ভাবের ঘরে চুরি করে কোন লাভটি তাঁর হল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরপরই গোটা পশ্চিমবঙ্গ জেনে যায়, দেবশ্রী চৌধুরী আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নন। তবে আরও জানা যায়, বাংলা থেকে দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রে মন্ত্রী ছিলেনও বটে।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী আরএসএস ঘনিষ্ঠ। কিন্তু রাজ্য– রাজনীতিতে পরিচিত মুখ ছিলেন না। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দেবশ্রী চৌধুরী রায়গঞ্জ থেকে জয়ী হয়েছিলেন। মহম্মদ সেলিম এবং দীপা দাশমুন্সির ভোট কাটাকাটিতে ওই আসনে দেবশ্রী জিতে যান। রাতারাতি দেবশ্রী মন্ত্রী হয়ে গেলেন। রাজ্য বিজেপি নেতাদের অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু কিছু করার ছিল না। ২০২৪ সালের সোকসভা নির্বাচনে তিনি দাঁড়ালে জিততে পারবেন না বলে জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে সূত্রের খবর।
দু’বছর তিনি মন্ত্রী থাকলেও রাজ্য–রাজনীতি বা জাতীয় রাজনীতিতে তেমন দাগ কাটতে পারেননি। একুশের নির্বাচনেও তাঁকে নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছিল। তাই তাঁর নামে নালিশ ঠুকেছিল রাজ্য নেতারা। তারপরই দেখা গেল উত্থান যেভাবে হয়েছিল পতনও একই গতিতে হল। মানুষের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বেড়ে না ওঠায় মন্ত্রিসভা থেকে তিনি খসে পড়লেন।
বালুরঘাটের মেয়ে দেবশ্রী চৌধুরী পড়াশোনার সূত্রে কলকাতায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখান থেকে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য হন। এক সময়ের বিদ্যার্থী পরিষদের রাজ্য সভাপতি দেবশ্রী বিজেপিতে জায়গা করে নিলেন। উত্তরবঙ্গে হিন্দুত্ব রাজনীতির শুরু থেকেই ছিলেন বালুরঘাটের দেবীদাস চৌধুরী। তাঁরই মে্যে দেবশ্রী। ফলে তাঁর উত্থানের পিছনে আরএসএসের ভূমিকা বরাবরই ছিল।
২০১৯ সালে রাজ্যে বিজেপি ১৮টি লোকসভা আসনে জিতেছিলেন। তখন বর্ধমান–দুর্গাপুর থেকে জিতলেও অহলুওয়ালিয়া বাদ দিয়ে মন্ত্রিসভায় আসেন দেবশ্রী। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান–দুর্গাপুর আসনে হেরেছিলেন দেবশ্রী। ২০১৯ সালের জয়ই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম সাফল্য। তাতেই মন্ত্রী। কিন্তু একুশের নির্বাচনে তাঁর রিপোর্ট ভাল নয়। লোকসভায় চারটি আসনে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনে জয় মিলেছে দু’টিতে। এখন দেখার মন্ত্রিত্ব খুইয়ে তিনি রাজ্যের কোন পদে আসেন।