পঞ্চম দফায় নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি জেলায়। জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জ্জিলিং, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব বর্ধমান।
জলপাইগুড়ির ৭টি বিধানসভা, কালিম্পং’এর ১টি এবং দার্জ্জিলিং’এর ৫টি বিধানসভাতেই হয়ত জিততে চলেছে বিজেপি। নাগরাকাটা, কালিম্পং, দার্জ্জিলিং ও কার্শিয়াং ছাড়া জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার অন্য সবক’টি আসনই অবস্থানগতভাবে হয় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অথবা সীমান্ত-নিকটবর্তী। জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ, শিলিগুড়ি ও ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা অবস্থিত সীমান্তের ওপর আর ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, মাল, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ও মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির অবস্থান সীমান্ত-নিকটবর্তী স্থানে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উক্ত ১৩ টি বিধানসভা ক্ষেত্রের মধ্যে কেবলমাত্র রাজগঞ্জে তৃণমূল পেয়েছিল বিজেপির চাইতে সামান্য বেশি ভোট। বাকি ১২ টি বিধানসভা ক্ষেত্রেই তৃণমূলের চেয়ে বিপুল ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গ তেমনভাবে গ্রহন করে নি তৃণমূলকে যা নিয়ে বহুবার অভিমান করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপি বহুদিন যাবৎ উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক পছন্দ। এসব থেকেও বলা যায়—এবছর যখন এ রাজ্যে সরকার গঠন করার সম্ভাবনা প্রথমবার দেখা দিয়েছে, তখন বিজেপিকে নির্বাচনী সহায়তা উত্তরবঙ্গ করবে। পর্যটন, কৃষি, চা-চাষ, পরিকাঠামো এবং অতিক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে অপরিসীম উন্নতি করার সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের আছে। বিজেপি তাদের দলগত সংকল্পপত্রে এবং নেতাদের ভাষণে সেই সম্ভাবনার বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেছে। ১০ই এপ্রিল শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় জনগণের মধ্যে দেখা গিয়েছে উন্মাদনা। অনেকে বলেছেন শিলিগুড়ির ভাষণটিই সাম্প্রতিক অতীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসন বর্তমানে তৃণমূলের গৌতম দেবের দখলে। সাম্প্রতিক অতীতে গৌতম দেবকে দেখা গিয়েছে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির লোককে ‘হয় টিএমসিকে ভোট দিন, নয়ত গুজরাট চলে যান’ বলে ধমকাতে। এমত আচরণের কারণ সম্ভবতঃ নার্ভাসনেস। আসন্ন নির্বাচনে অতি-সম্ভাব্য পরাজয়ের শঙ্কায় শঙ্কিত গৌতম দেব। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির মানুষ বিপুল ভোটে এগিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপিকে। মোট ভোটের ৬৩% ই পেয়েছিল বিজেপি, আর তৃণমূলের ভাগে পড়েছিল ২৭%.
আসা যাক নদীয়া জেলায়। এই জেলার যে ৮ টি বিধানসভায় নির্বাচন হতে চলেছে ১৭ই এপ্রিল, তার ৬ টি অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তে ও সীমান্ত নিকটবর্তী স্থানে। গত বিধানসভায় শান্তিপুরের বিধায়ক কংগ্রেসের অরিন্দম ভট্টাচার্য্য বর্তমানে বিজেপিতে। উপরন্তু, ২০১৯ এর লোকসভায় বিপুল ভোটে বিজেপিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শান্তিপুর বিধানসভা ক্ষেত্রের জনগণ। এই নির্বাচনেও নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি নদীয়া জেলায় বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের মূল কারণ হতে চলেছে—এমনই বলছেন নদীয়ার মানুষ। নদীয়ার সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে আসছে ইসলামিক আগ্রাসনের আঁচ। সাম্প্রতিক অতীতে এই জেলা শিকার হয়েছে লাভ জিহাদ ও জমি জিহাদের। পশ্চিমবঙ্গের মেইনস্ট্রিম সংবাদমাধ্যমগুলি সেসব খবর পরিবেশন না করলেও এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন সে সমস্যার কোনো সদুপায় না করলেও নদীয়ার মানুষ সেই তাপে পুড়ছেন এবং এই ইস্যুতেই তাঁদের কাছে তৈরি হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির গ্রহনযোগ্যতা। জেলার মহিলাদের দৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বাসযোগ্যতা অপরিসীম। এইগুলিই অন্যতম কারণ যে জন্য কৃষ্ণগঞ্জ, রাণাঘাট উত্তরপূর্বর মত সীমান্তবর্তী এবং রাণাঘাট উত্তরপশ্চিম, রাণাঘাট দক্ষিণ ও চাকদহর মত সীমান্ত-নিকটবর্তী বিধানসভাগুলি এবার বিজেপিকে নির্বাচন করতে পারে। নদীয়া জেলার আট’টি বিধানসভা ক্ষেত্রই ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে এগিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এগিয়ে থাকার মার্জিন কিছু কম ছিল কেবলমাত্র হরিণঘাটা ও কল্যানী বিধানসভা ক্ষেত্রে। কল্যানীতে বিজেপি পেয়েছিল তৃণমূলের চেয়ে ৩.৪৩% বেশি, আর হরিণঘাটায় পেয়েছিল ৪.৭২% বেশি ভোট। অন্য ছ’টি কেন্দ্রে বিজেপির মার্জিন ছিল অনেক বেশি।
বর্ধমানের ৮টি বিধানসভার মধ্যে শহুরে আসন বর্ধমান দক্ষিণ হয়ত নির্বাচন করতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে জামালপুর ও মেমারি বিধানসভা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির জয়ের সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি হলেও খণ্ডঘোষ সম্ভবতঃ জেতাবে তৃণমূলকে আর রায়না ভোট দেবে হয় তৃণমূল নয়ত বামেদের পক্ষে। নজর থাকবে কালনা ও মন্তেশ্বরেও। এই দুই বিধানসভার দু’জন বিদায়ী তৃণমূলী বিধায়ক এবছর বিজেপির হয়ে উক্ত দুই বিধানসভা থেকে লড়ছেন। ২০১৬’র বিধানসভা নির্বাচনে কালনায় তৃণমূলের ভোট শতাংশের চেয়ে ২০১৯ এর লোকসভায় তৃণমূলের ভোট শতাংশ কমে গিয়েছিল তাৎপর্যপূর্ণভাবে। ২০১৯-এ কালনায় বিজেপির চেয়ে তৃণমূল বেশি পেয়েছিল মাত্র ১.৮২% ভোট। এই তথ্যকে কালনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি ফিলিং’এর পরোক্ষ নির্দেশক বলে ধরা যেতে পারে যা শেষ পর্যন্ত পানি জোগাতে পারে বিজেপির হালে।
গত বিধানসভায় তৃণমূলের মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবার লড়ছেন মন্তেশ্বর থেকে বিজেপির সৈকত পাঁজার বিরুদ্ধে যে সৈকত পাঁজা গত বিধানসভায় মন্তেশ্বর থেকে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী পশ্চিমবঙ্গে রাডিকাল ইসলামিক লবির এক প্রতিনিধি যিনি একদল ক্রুদ্ধ মুসলিম জনতাকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানে ঢোকার মুখে আটকে দিতে চেয়েছিলেন কোভিড ভ্যাকসিন ভর্তি ট্রাক। এ হেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও মন্তেশ্বর থেকে তৃণমূলের হয়ে জিতবেন বলে মনে হয় আর বর্ধমান উত্তরে জিততে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। স্বাভাবিকভাবে ভাবলে পূর্ব বর্ধমানের ৮ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ও বামেরা মিলে পেতে পারে ৩ থেকে ৪ টি আসন। কিন্তু “পশ্চিমবঙ্গের ধানের গোলা” বলে খ্যাত কৃষিপ্রধান জেলা বর্ধমানের অসংখ্য কৃষক গত দু’বছর যাবৎ বঞ্চিত রয়ে গিয়েছেন পিএম কিষাণ সম্মান নিধির অর্থমূল্য থেকে, শিকার হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রবিরোধী জেদাজেদির রাজনীতির। বিজেপি ঘোষণা করেছে সরকার গঠন করা মাত্র গত দু’বছরের অপ্রাপ্ত রাশি বাবদ নগদ ১৮০০০ টাকা সরাসরি পাঠানো হবে প্রতি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কৃষিপ্রধান বর্ধমানের কৃষকরা কি এমন সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলবেন? যদি তেমন না করেন, তবে পূর্ব বর্ধমানের সব স্বাভাবিক হিসাবকে উল্টে দিয়ে এ জেলাতেও ঘটতে পারে গৈরিক অভ্যুত্থান।
উত্তর চব্বিশ পরগনার ১৬টি বিধানসভার মধ্যে হিঙ্গলগঞ্জ ও বসিরহাট অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ নদী-সীমান্তে আর বসিরহাট উত্তর, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ, হারোয়া ও দেগঙ্গার ভৌগোলিক অবস্থান সীমান্ত-নিকটবর্তী স্থানে। এই কেন্দ্রগুলি অপরাধপ্রবণ, অনুপ্রবেশ-দীর্ণ, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা যেগুলির তৃণমূলের দখলে থাকাই সর্বাধিক সম্ভাব্য।
২০১০ সালে দেগঙ্গায় হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। হাজি নুরুল ইসলাম ছিলেন দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। শেখ হাজি নুরুল অবশ্য এবছরও হারোয়া থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। সন্দেশখালি ইসলামিক জিহাদের শিকার হয়েছে এমনকি ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরেও। সন্দেশখালির সরবেরিয়া আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূলের বাহুবলী শেখ শাহজাহানের নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তা প্রদীপ মণ্ডল, সুকান্ত মণ্ডলদের। সন্দেশখালির সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছিলেন শেখ শাহজাহান তার রোহিঙ্গা-ব্রিগেডসহ হাজির হয়েছিল মণ্ডলদের মারতে। অনেক চেষ্টার পর শাহজাহানের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল FIR, কিন্তু লাভ কিছু হয় নি। ঐ ঘটনার পর সন্দেশখালি ছাড়তে হয়েছিল বহু হিন্দু পরিবারকে।
হিঙ্গলগঞ্জ যদিও মূলতঃ হিন্দু-অধ্যুষিত একটি স্থান, কিন্তু অনুপ্রবেশকারীরা এখানে ভোট দিতে আসে সুন্দরবন অঞ্চলের খাঁড়ি বেয়ে সাহেবখালির মত দ্বীপগুলি থেকে। আগামী দফায় সুষ্ঠু ও যথাযথ নির্বাচন পরিচালনার্থে উক্ত বিধানসভাগুলির সীমান্ত-সুরক্ষা আবশ্যক, ফলে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের অতিসক্রিয়তা প্রত্যাশিত। কোচবিহারের শীতলকুচিও একটি সীমান্তবর্তী বিধানসভা। যে প্রকৃতির ঘটনা সেখানে গত ১০ই এপ্রিল ঘটেছে, তার অব্যবহিত পরেই নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী যার মধ্যে রয়েছে ৩৩ কোম্পানি অতিরিক্ত বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এবং ৯ কোম্পানি অতিরিক্ত সীমা সুরক্ষা বল। বস্তুতঃ, পঞ্চম দফা থেকেই এ রাজ্যের নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের।
অনুপ্রবেশ বন্ধ রাখতে পারলে, বাহুবলীদের দাপট রুখতে পারলে এবং নির্বিঘ্নে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটদান কেন্দ্রে ভোটারদের আগমন ও ভোটদান নিশ্চিত করতে পারলে হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট দক্ষিণ ও সন্দেশখালি বিধানসভা বিজেপির পক্ষে যেতে পারে। রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক এই বিধানসভাগুলিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পূণতঃ নির্ভর করবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিশ্ছিদ্রতার উপর।
হাড়োয়া ও দেগঙ্গা বিধানসভায় মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন তৃণমূল ও আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ—দুই দলের তরফ থেকেই। কিন্তু তাতে উক্ত দুই কেন্দ্রের মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে বিজেপির নির্বাচনী সুবিধা হবে, এমন ধারণার বাস্তবায়ন অসম্ভাব্য। বরং উক্ত দুই অপরাধপ্রবণ, সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূল ও আইএসএফ’র মধ্যে একটি উইন-উইন বোঝাপড়া তৈরি হওয়াই অধিক সম্ভাব্য। ইতিপূর্বে সবিস্তারে লিখেছি—তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে নীতিগত কোনো বিরোধ নেই।
বারাসত বিধানসভা হয়ত জিতবে গেরুয়া পার্টি আর মধ্যমগ্রাম থাকতে চলেছে তৃণমূলের সাথে। মধ্যমগ্রাম বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপি লড়াই তীব্র হবে বলে ভাবছেন সাধারণ মানুষ। রাজারহাট গোপালপুর ও বিধাননগর—দুই কেন্দ্রেই জিততে চলেছে বিজেপি আর রাজারহাট নিউটাউনে তৃণমূল-বিজেপি লড়াই হতে চলেছে খানিক হাড্ডাহাড্ডি। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে রাজারহাট নিউটাউনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু সেই সময় উক্ত কেন্দ্রের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বর্তমানে বিজেপিতে। সব্যসাচী দত্তের স্থানীয় জনপ্রিয়তার সুফল এই নির্বাচনে বিজেপি পাবে, ফলে রাজারহাট নিউটাউনেরও গৈরিকীকরণ সম্ভাব্য
দমদমে জমেছে অ্যান্টি-ইনকাম্বেসি ফিলিং। মানুষ এই কেন্দ্রের তৃণমূল-বিধায়ক তথা প্রার্থী ব্রাত্য বসুর ওপর বিরক্ত। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূলের ভোট বিজেপির ভোটের চেয়ে বেশি ছিল মাত্র ২.৮৪%। উপরন্তু বিজেপির তরফ থেকে জোরদার নির্বাচনী প্রচার এই কেন্দ্রকেও নিয়ে আসতে পারে গেরুয়া পার্টির দখলে। মনে রাখা প্রয়োজন, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে দমদম লোকসভা কেন্দ্র পরপর দু’বার জিতিয়েছে বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তপন শিকদারকে। উপর থেকে যেমনই হোক, দমদম লোকসভা কেন্দ্রের হৃদয়টি গৈরিক।
বরানগরে জয়ের সম্ভাবনা তৃণমূলের তাপস রায়ের আর কামারহাটিতে বিজেপি-তৃণমূল-বামের ত্রিমুখী লড়াইয়ের পর শেষ হাসি হাসবার সম্ভাবনা তৃণমূলের মদন মিত্রের।
পানিহাটি বিধানসভায় লড়াই মূলতঃ কংগ্রেসের প্রাক্তনীবর্গের মধ্যে। প্রাক্তন কংগ্রেসী তৃণমূলের নান্টু ঘোষ, প্রাক্তন কংগ্রেসী বর্তমানে বিজেপির সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেসের তাপস মজুমদারের মধ্যে লড়াই এই কেন্দ্রে ত্রিমুখী। সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন, যার সম্ভাবনা প্রবল, সেক্ষেত্রে পানিহাটি হতে চলেছে এমন একটি আসন যেখান থেকে বিজেপি প্রার্থীর জয়ের কৃতিত্ব কেবল ভারতীয় জনতা পার্টির নয়, প্রার্থীর নিজের ওপরেও বেশ খানিক বর্তাবে। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘বাংলার বার্তা’র মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসংবেদনশীল একনায়কতন্ত্রকে অনবরত জনগণের কাছে তুলে ধরেছেন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার জন্য ব্যক্তিগতভাবে পড়েছেন শাসকের রোষেও। তবে পানিহাটির প্রার্থী হিসেবে সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিলেকশনের প্রেক্ষিত হিসেবে গত লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির পারফরম্যান্সের কথাও উল্লেখ্য। ২০১৯ লোকসভায় পানিহাটিতে বিজেপির ভোট তৃণমূলের চেয়ে কম ছিল মাত্র ৫.৭৫%. অতএব আগামী ১৭ই এপ্রিল পানিহাটিতে গোলমাল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তৃণমূলের নির্মল তথা নান্টু ঘোষের গুণ্ডামির ইতিহাস বহুজনবিদিত। নির্বাচনে পরাস্ত হওয়ার পূর্বে তাঁর মরিয়া হয়ে ওঠা অপ্রত্যাশিত নয় এবং সে বিষয়ে নিরাপত্তার প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে থাকবে বলে আশা করা যায়।
সংখ্যা ও জনমতগত হিসেব অনুযায়ী পঞ্চম দফার নির্বাচনে সর্বাধিক ৩৩/৩৪ টি থেকে অন্ততঃপক্ষে ২৮/২৯ টি আসন ভারতীয় জনতা পার্টি জিততে পারে বলে আন্দাজ করা যায়।
Election Date | Constituency No. | Constituency Name | District |
17.04.2021 45 Assemblies | 15 | Dhupguri | Jalpaiguri 7 Assemblies Election over |
16 | Maynaguri | ||
17 | Jalpaiguri | ||
18 | Rajganj | ||
19 | Dabgram-Fulbari | ||
20 | Mal | ||
21 | Nagrakata | ||
22 | Kalimpong | Kalimpong | |
23 | Darjeeling | Darjeeling 5 Assemblies Election over | |
24 | Kurseong | ||
25 | Matigara-Naxalbari | ||
26 | Siliguri | ||
27 | Phansidewa | ||
86 | Santipur | Nadia 8 Assemblies out of 17 Total | |
87 | Ranaghat Uttar Pashchim | ||
88 | Krishnaganj | ||
89 | Ranaghat Uttar Purba | ||
90 | Ranaghat Dakshin | ||
91 | Chakdaha | ||
92 | Kalyani | ||
93 | Haringhata | ||
111 | Panihati | Uttar 24 Parganas 16 Assemblies out of 33 Total | |
112 | Kamarhati | ||
113 | Baranagar | ||
114 | Dum Dum | ||
115 | Rajarhat New Town | ||
116 | Bidhannagar | ||
117 | Rajarhat Gopalpur | ||
118 | Madhyamgram | ||
119 | Barasat | ||
120 | Deganga | ||
121 | Haroa | ||
122 | Minakhan | ||
123 | Sandeshkhali | ||
124 | Basirhat Dakshin | ||
125 | Basirhat Uttar | ||
126 | Hingalganj | ||
259 | Khandaghosh | Purba Bardhaman 8 Assemblies out of 16 Total | |
260 | Bardhaman Dakshin | ||
261 | Raina | ||
262 | Jamalpur | ||
263 | Monteswar | ||
264 | Kalna | ||
265 | Memari | ||
266 | Bardhaman Uttar |
দেবযানী ভট্টাচার্য্য