ভারতের লাদাখের (Ladakh) একটি অংশকে চিনের সীমানার ভিতরে বলে দেখানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর ওয়েবসাইটে! এই মানচিত্র প্রকাশের পরেই তোলপাড় পড়ে গেছে সারা বিশ্বে। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আমেরিকাও।
এদিন হু (Who) -এর ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে, লাদাখের অনেকটা অংশ ভারতের সীমানার ভিতরে নেই। চিনের আওতায় ঢুকে গিয়েছে। এই অংশটি সীমান্ত ঘেঁষা, একে আকসাই চিনও বলা হয়। কিন্তু ভারতেরই ভূখণ্ডকে এভাবে অন্য দেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি অনেকেই। উঠেছে চিনের প্রতি হু (Who) -এর পক্ষপাতের অভিযোগও।
মানচিত্রে দেখা গিয়েছে, ভারতের যা রং, লাদাখের অনেকটা অংশে সেই রং আলাদা। চিনের মানচিত্রের রঙেই রং করা হয়েছে লাদাখকে। ফলে লাদাখ স্পষ্টতই চিনের অংশ হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়। জম্মু ও কাশ্মীরের একটা বড় অংশকেও পাকিস্তানের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে এই মানচিত্রে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর বলে যে অংশটি, সেটাই পাকিস্তানে ঢুকে গেছে। অথচ বাস্তবে এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, এই অংশকে পাকিস্তানের অংশ বলে মানতে চায় না ভারত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানচিত্র সে সবের ধার ধারেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছিলেন, চিনের সঙ্গে হু-এর সখ্য চোখে পড়ার মতো বেশি। করোনা ছড়ানোর পেছনে চিনের ভূমিকাকে আড়াল করতে চেয়েছে হু– এমন অভিযোগও এনেছিল আমেরিকা। ট্রাম্প এও ঘোষণা করেছিলেন, হু (Who) -কে আর্থিক ফান্ডিং দেওয়া বন্ধ করা হবে চিনের প্রতি প্রকট পক্ষপাতের অভিযোগে। এবার ভারতের অংশ লাদাখের একাধিক জায়গা চিনের আওতায় বলে দাবি করায় ফের চিনের প্রতি হু-এর অন্যায্য পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতেই ভারতের অরুণাচল প্রদেশের বেশ কিছু অংশকে নিজের সীমানার আওতায় বলে দাবি করেছিল চিন, যা ঘিরে বিতর্ক কম হয়নি। এই অবস্থায় আবারও কী করে চিনের ভিতরে লাদাখ ঢুকে গেল হু-এর ম্যাপে, তা নিয়ে বড় বিতর্ক ঘনিয়েছে বিশ্বরাজনীতিতে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালের মানচিত্র অনুযায়ী তৈরি হয়েছিল চিনের মানচিত্র ‘স্কাই ম্যাপ’। রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সীমান্ত বিষয়ে সমঝোতার পর এই মানচিত্র তৈরি হয় নতুন করে। তবে ১৯৮৯ সালের সেই মানচিত্র আপাতত পাল্টেছে স্কাই ম্যাপ। বহু অংশ ঢুকে গেছে চিনের মধ্যে। লাদাখ তথা আকসাই চিনকেও এভাবেই নিজেদের সীমানার ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়েছে তারা।
এবার হু (Who) -এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হল সেই মানচিত্রের ছবিই। অভিযোগ, চিনের আগ্রাসী মনোভাবকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করেছে হু (Who)।