পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে জইশ ই মহম্মদ মৌলানা মাসুদ আজহারকে যাতে ব্ল্যাক লিস্টেড করা যায়, সেজন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। আরও কয়েকটি দেশ প্রস্তাব সমর্থন করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভেটো দিয়ে প্রস্তাব পাশ করাতে দেয়নি পাকিস্তানের মিত্র চিন। আমেরিকা যে ব্যাপারটাকে মোটেই ভালোভাবে নেয়নি, সেকথা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন সেদেশের দূত। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার প্রতিনিধি কড়া ভাষায় বলেছেন, ওই প্রস্তাব পাশ না হলেও আমরা অন্য ব্যবস্থা নিতে পারি।
মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করা হলে তাঁর সম্পত্তি ফ্রিজ করে দেওয়া হত। তাঁর চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হত। তাঁকে যাতে কেউ অস্ত্র বেচতে না পারে, সেদিকেও লক্ষ রাখত আন্তর্জাতিক মহল। এই নিয়ে চারবার রাষ্ট্রপুঞ্জে মাসুদকে কালো তালিকাভূক্ত করার চেষ্টা হল। কিন্তু প্রত্যেকবারই ভেটো প্রয়োগ করে আটকে দিয়েছে চিন। কিন্তু এবার আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সরাসরি মুখ খুলেছেন চিনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, বেজিং যদি সত্যিই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়, তাহলে যেন পাকিস্তান বা অন্য কোনও দেশের সন্ত্রাসবাদীদের রক্ষা না করে।
চিন যে আগেও মাসুদকে রক্ষা করেছে, সেকথা উল্লেখ করে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত বলেন, বেজিং যেন নিরাপত্তা পরিষদকে নিজের কাজ করতে বাধা না দেয়। এরপরেই তিনি চিনকে সতর্ক করে বলেন, যদি তারা বার বার একই প্রস্তাব পাশ করাতে বাধা দেয়, তাহলে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলি হয়তো অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
চিন ভেটো দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ভারতও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমরা অসন্তুষ্ট। যারা আমাদের দেশের নাগরিকদের আক্রমণ করে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবই। যে দেশগুলি মাসুদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনেছিল, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জঙ্গি হানার পরে নিরাপত্তা পরিষদে মাসুদকে কালো তালিকাভূক্ত করার চেষ্টা হয়। সেবারও ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভেটো দেয় চিন। তাদের বক্তব্য, মাসুদকে নিয়ে এমন কোনও প্রস্তাব পাশ করাতে হবে, যাতে সকলেরই সমর্থন আছে। মাসুদের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব আনলে পাকিস্তান কখনই সমর্থন করবে না। সেবার ভারত বলেছিল, মাসুদ সম্পর্কে চিনের অবস্থান স্পষ্ট নয়। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ভেটো প্রয়োগ করার কিছুক্ষণ আগেও চিনের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেননি। শুধু বলেছিলেন, তাঁরা দায়িত্বশীল অবস্থান নেবেন।