পাকিস্তানে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হিন্দু মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করার ঘটনায় উদ্বেগে নয়াদিল্লি৷ পাকিস্তানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন স্বয়ং বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ৷ ট্যুইট করে বিদেশমন্ত্রী মিডিয়া রিপোর্টের কিছু অংশ তুলে ধরেন এবং জানান, দূতাবাসের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি৷
হোলির আগের দিন পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে দুই নাবালিকাকে কিছু লোক তুলে নিয়ে যায়৷ খবরে প্রকাশ, ১৩ বছরের রবিনা ও ১৫ বছরের রীনাকে সিন্ধ প্রদেশের গোতকি জেলার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ অপহরণকারীরা প্রভাবশালী বলে পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে৷ এই ঘটনার পর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়৷ যেখানে দেখা গিয়েছে ওই দুই নাবালিকার মুসলিম মতে বিয়ে হচ্ছে৷
পরে আরও একটি ভিডিওতে স্পষ্ট হয় ওই দুই নাবালিকাকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে৷ দ্বিতীয় ভিডিওটিতে দুই বোন দাবি করে, তারা স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন৷ কেউ জোর করেনি৷ এমনকী এই বিয়েতে তাদের মতও রয়েছে৷ দুই বোন এই দাবি করলেও তা মানতে নারাজ পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুরা৷ ইমরান খান সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা৷
ইমরান খান মোদী সরকারকে খোঁচা মেরে একবার জোর গলায় দাবি করেছিলেন, ভারত যদি সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা দিতে না পারলেও পাকিস্তান সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে৷ পাকিস্তান হিন্দু সেবা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি সঞ্জেশ ধানজা ইমরান খানকে সেই কথা মনে করিয়ে দেন৷ জানান, দোষীদের শাস্তি দিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করে দিক পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা সুরক্ষিত ও নিরাপদে আছেন৷ তাঁর কথায়, সংখ্যালঘু হিন্দু মেয়েদের অপহরণ করে তাদের প্রথমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হয়৷ এরপর বয়সে বড় ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়৷ সিন্ধ প্রদেশে আকছার এমনটা হচ্ছে৷ পুলিশ ঘটনার কোনও অভিযোগ নেয় না৷ বারবার এমন ঘটতে থাকায় বাধ্য হয়ে মানুষ প্রতিবাদ করে৷ তখন অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও অভিযোগ নেয় পুলিশ৷
এদিকে দুই নাবালিকা অপহরণের পরই থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় পরিবারের তরফে৷ এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও অন্যজনকে খুঁজছে পুলিশ৷ প্রাথমিক তদন্ত জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের একজনের সঙ্গে অপহৃতা নাবালিকার বাবার কথা কাটাকাটি হয়৷ হোলির দিন আগে সেই ব্যক্তি বন্দুকের নলে তাঁর দুই মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়৷ হিন্দু মেয়েদের অপরহণ করে ধর্মান্তকরণের ঘটনা আটকাতে পাক সংসদে একটি বিল আনা হয়েছিল৷ যিনি এই বিলটি এনেছিলেন সেই রাজনীতিকের কথায়, সরকারের উচিত আর দেরি না করে বিলটি দ্রুত পাশ করা৷