বিতর্কিত কৃষক আইনের বিরুদ্ধে উত্তাল দিল্লি। এরই মধ্যে সংসদে অধিবেশন। আর সেই অধিবেশন ঘিরে সংসদে ঝড় ওঠার আশঙ্কা। কারণ ইতিমধ্যে কৃষি আইনের বিরোধিতায় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত শাসকদল তৃণমূলের।
শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সমর্থন জানিয়ে একই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল ১৬ টি বিরোধী দল। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে সংসদ অধিবেশন বয়কট করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ। পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স, শিব সেনা, ডিএমকে, সিপিএম সকলেই।
বৃহস্পতিবার বিধানসভা অধিবেশন শেষে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সংসদের প্রথম দিন অনুপস্থিত থাকবে তৃণমূল। তিনিই জানান, আরও ১৬ টি দলও একই সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে বলে শুনেছেন।
উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে সংসদ অধিবেশনের শুরু হয়। সেই মতো এবারও ২৯ জানুয়ারি, অর্থাৎ সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনও রয়েছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণ। কিন্তু তাতে থাকবেন না তৃণমূল সাংসদরা, থাকবেন না আরও ১৬ টি দলের জনপ্রতিনিধিরাও।
একই পথে হেঁটে সংসদের প্রথম দিন রাষ্ট্রপতি ভাষণ বয়কটের কথা জানিয়েছেন আম আদমি পার্টিও। গুলাম নবি আজাদ জানিয়েছেন, বিরোধীদের মতামত না নিয়ে একক সিদ্ধান্তেই কৃষি বিল পাশ করিয়ে আইনে পরিণত করেছে কেন্দ্র সরকারপক্ষ।
তারই প্রতিবাদে চলতি অধিবেশনের প্রথম দিন বয়কট। রাজনৈতিকমহলের মতে, শুধু সংসদ অধিবেশনের প্রথমদিন নয়। অধিবেশন চলাকালীন প্রত্যেকদিনই সংসদে ঝড় তুলতে পারে বিরোধী দলগুলি।
অন্যদিকে, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়েই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যে কৃষকদের বিক্ষোভ থেকে সরে গিয়েছে রাষ্ট্রীয় কিষান মজদুর সংগঠন ও ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (ভানু) নামের দুই ইউনিয়ন। ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে কৃষকদের পাশেই দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তবে এই ঘটনার জন্য পুলিশের ব্যর্থতার দিকেই আঙুল তুলেছে তারা৷
তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “এটা পুলিশের ব্যর্থতা। আগে থেকে বিক্ষোভ-আন্দোলনের আঁচ কেন দিল্লি পুলিশ বুঝল না সেটা ভাবা দরকার৷” শুধু তাই নয়, আন্দোলনকারীরা লালকেল্লায় কীভাবে পৌঁছল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, “এটা পরিষ্কার যে বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার না করলে কৃষকরা থামবে না। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ?”
রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার অনমনীয় মনোভাবের জন্যই এই অবস্থা। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই আইন এনেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে নয়া কৃষি আইন বাতিল করা।” সুব্রত মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, “এতদিন ধরে কৃষকরা দিল্লির রাস্তায় আন্দোলন করছেন। অথচ সবটাই ছিল শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোনও অশান্তি, বিক্ষোভ বা হিংসার ঘটনা ঘটেনি। এদিকে গতকালকের মিছিল ঘিরে যে ঘটনা ঘটল তা অনভিপ্রেত। এর তাত্ক্ষণিক বিচার করা সম্ভব নয়। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রয়োজন।”
তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় বলেছেন, “ওঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল৷ তাই কোনও বাধাই ওদের সামনে বড় হতেই পারেনি৷ পুলিশ আটকাতে পারেনি৷”