কাশ্মীরে বড়সড় হামলার হুমকি, ভিডিয়ো প্রকাশ আল-কায়দা প্রধানের, গুরুত্ব দিতে নারাজ কেন্দ্র

ভারতের উপর বড়সড় হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দা। সংগঠনের প্রধান আয়মান অল জাওয়াহিরি মুজাহিদিনদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে ওই ভিডিয়োতে বলেছেন, কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা ও সরকারের বিরুদ্ধে টানা হামলা চালিয়ে যাও।

এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আল-কায়দার সেই হুমকি উড়িয়ে দিল ভারত।আয়মান অল জাওয়াহিরি হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে বরং ভারত সরকার জানিয়েছে, একে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। নয়া দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার জানিয়েছেন, এইধরনের হুমকি হামেশাই পেয়ে থাকে ভারত। এতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। গুরুত্ব দেওয়ারও দরকার নেই। ভারতকে সবরকম ভাবে সুরক্ষিত রাখার জন্য নিরাপত্তারক্ষীরা যথেষ্ঠ তৈরি এবং সক্ষম।

ওসামা বিন লাদেনের পরে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার শীর্ষ নেতা হয়েছেন আয়মান অল জাওয়াহিরি। সম্প্রতি তিনিই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা গিয়েছে বারবার ভেসে উঠছে জাকির মুসার ছবি। এই জাকির মুসা ছিলেন আল-কায়দার ভারতীয় শাখার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁকে বলা হত ‘আনসার গাজওয়াত উল হিন্দ’। তিনি গত মে মাসে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে নিহত হন। তবে মুসার ছবি ছাড়াও ওই ভিডিয়োতে হাজির ছিলেন জাওয়াহিরি নিজে। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমি মনে করি, কাশ্মীরে যে মুজাহিদিনরা রয়েছেন, তাঁদের উচিত ভারতীয় সেনা ও সরকারের ওপরে আঘাত হানা। শুধু এই কাজটিতেই তাঁদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাঁরা চেষ্টা করুন যাতে ভারতের অর্থনীতির ক্ষতি হয়। ভারতের বহু লোক মারা যায়। তাদের যুদ্ধের সরঞ্জামও ধ্বংস হয়ে যায়।”

পাশাপাশি পাকিস্তানকেও এক হাত নিয়েছেন আল-কায়দা প্রধান। পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করে জাওয়াহিরি বলেন, ওই দেশের সরকার আমেরিকার দালাল। তাঁর দাবি, আরব মুজাহিদিনরা আফগানিস্তানকে রাশিয়ার হাত থেকে মুক্ত করার পরে কাশ্মীরে লড়াই করতে চেয়েছিল। পাকিস্তান তাদের বাধা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি সেনা ও সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশে মুজাহিদিনদের ব্যবহার করতে চায়। নিজেদের কাজ ফুরিয়ে গেলে তাদের আর পাত্তা দেয় না। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে বিরোধ, তার সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। দুই দেশের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকা।

জাওয়াহিরির কথায়, কাশ্মীরের লড়াইকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে চলবে না। বিশ্ব জুড়ে মুসলিমরা নানা শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। কাশ্মীরের লড়াই তারই অংশ। তবে আল-কায়দার এইসব হুমকিকে পাত্তা দিতে নারাজ ভারত সরকার। বরং তাদের দাবি, জঙ্গি হানার সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে। এবং জম্মু কাশ্মীরে নিরাপত্তাকর্মীরা যথেষ্ট সক্রিয়। ফলে জঙ্গি নিধন বেড়েছে। আর তাই জঙ্গিদের উৎসাহিত করতেই এই ভিডিয়োটি প্রকাশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.