মিলিটারি লেবেলে নয়, শান্তির জন্য দরকার মোদী-জিনফিংয়ের আলোচনা

মেজর জেনারেল লেবেলের বৈঠক ভারত-চিন সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। দরকার দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে যোগাযোগ সাধন করা। তবেই পুনরায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এমনটাই মনে করেন স্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভিক্টর গাও। যিনি চিনের প্রাক্তন নেতা ডেনি শিয়াংপিং এর দ্বিভাষী হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। 

শুক্রবার এক সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে ভিক্টর গাও বলেন, “ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনফিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনে কথা বলা উচিত। কারণ এই মুহূর্তে সমস্যা যে জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে তাতে মিলিটারি লেবেলে কথা বলে সমাধান হবে না। বরং সমস্যা আরও বাড়বে। তাই দু’দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও দেশের মানুষের স্বার্থে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এটাই একমাত্র পথ।”

১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় দুই বাহিনীর সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়েছেন এই কথা স্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। কিন্তু বেজিং এই সংঘর্ষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এ নিয়ে গাওয়ের যুক্তি, “এই মুহূর্তে পিপলস লিবারেশন আর্মি সীমান্ত হওয়া ঘটনার বিবরণ দিচ্ছে না একথা সত্যি। তার মানে এটা নয় তারা শেষ পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকবে। এক্ষেত্রে ভারতের দিক থেকে স্বচ্ছতার বিভিন্ন রূপ দেখা গিয়েছে।” তবে ভারতীয় সেনা ও চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমসে’র তরফে জানানো হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষে চিনের কমপক্ষে ৩০ জন সেনা নিহত হয়েছেন। 

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের ওপর চিনের এই হামলা ঘটনায়, সারা ভারত জুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন মহল। এ প্রসঙ্গে গাওয়ের আশঙ্কা, চিনের সঙ্গে চুক্তি শেষ করা এবং ভারত যদি চিনা পণ্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় তবে ফল হিতে বিপরীত হবে। কারণ এতে চিনা সংস্থাগুলি দাম আরও বাড়িয়ে তুলনামূলক খারাপ জিনিস রপ্তানি করবে। ফলে এই জিনিসগুলি ভারতীয়দের কাছে আগ্রহ সৃষ্টি করবে না। এছাড়া চিন থেকে প্রচুর জিনিস আমদানি করে ভারত। সেগুলো বন্ধ ভারতে কর্ম সংস্থান হারিয়ে প্রচুর মানুষ বেকার হয়ে যাবেন। 

পাশাপাশি ভারত সরকারের উদ্দেশে গাও বলেন, ” আমি ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করব যে এখন যুদ্ধ নয়। শান্তি, পরিকাঠামো ও উন্নয়নের দিকে ভারতের মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। চিন ও ভারতের এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ হল শান্তি ও উন্নয়ন বজায় রাখা। যদি ভারত, চীনের শত্রু হয় তাহলে বিশ্বের কাছে তা বিপদজনক হবে। তাই শান্তি ও উন্নয়নই সংযুক্ত করে রাখবে ভারত ও চিনকে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.