দেশভক্ত বিজ্ঞানীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার, ১.৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে বাম সরকার

দেশের অন্যতম খ্যাতনামা বিজ্ঞানী এস নাম্বি নারায়নানকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারির ঘটনায় অবশেষে ২৫ বছর পর বিচার পেলেন প্রাক্তন এই ISRO বিজ্ঞানী, তবে এর মধ্যেই দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।

১৯৯৪ সালে গ্রেপ্তারির সময়

ঘটনা ১৯৯৪ সালের, সেই সময় দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় গুরূত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন নাম্বি নারায়নান । সেই সময় আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাশিয়ার সাথে ক্রায়োজেনিক রকেট ইঞ্জিন তৈরীর কাজ করছিল ভারত সরকার এবং এর প্রধান করা হয়েছিল নাম্বি নারায়নানকে।

আর এই ইঞ্জিন তৈরির তথ্যই মালদ্বীপের দুই গুপ্তচরের কাছে পাচার করেছেন অভিযোগ তুলে তাকে গ্রেপ্তার করে তৎকালীন কেরালা সরকারের পুলিশ। যদিও পরে চাপে পড়ে এই মামলা CBI-কে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৯৬ সালে CBI এই চার্জ শিট থেকে ওনার নাম বাদ দেয় এবং ১৯৯৮ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ওনাকে নির্দোষ বলে জানিয়ে দেয় । এর পরেই নিজের ওপর হওয়া পুলিশি অত্যাচার এবং মান হানির বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০০১ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কেরালা সরকারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।এর আগে ওনাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং পুলিশি অত্যাচারের জন্য কেরালা পুলিশ ওনাকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল।

দেশের অপূরণীয় ক্ষতি

নাম্বি নারায়নানকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন তিনি ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ওনার ওপরের দায়িত্ব ছিল স্বদেশী ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন বানানোর, যার ফলে ভারত মহাকাশ বিজ্ঞানে অনেক ধাপ এগিয়ে যেত। উল্লেখ্য যে এর পর ফ্রান্সের সহযোগিতায় বিকাশ (VIKAS) নামে এই ইঞ্জিন বানায় এবং ২০০৮ সালের চন্দ্রযান-১ মিশন এই রকেটের মাধ্যমেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।

বিরোধীরা অনেকেই অভিযোগ করেন যে ওনার গ্রেপ্তারির পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল এবং তৎকালীন কেরালা সরকার তারই অংশিদার ছিল। এই বছরেই ওনার দেশের প্রতি অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ওনাকে পদ্ম ভূষন পুরস্কারের সন্মানিত করে ভারত সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.