উত্তর ভারতের ভয়াবহ বন্যায় ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৫৫। তার উপরে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কারণে কয়েক দিন ধরেই ফুঁসছিল যমুনা নদী, আজ পার করে ফেলল বিপদসীমাও। গোটা উত্তর ভারতে আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
গত কয়েক দিন ধরেই প্রবল বৃষ্টির জেরে বাড়ে যমুনার জলস্তর। এর পরে আরও আট লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয় হরিয়ানার হাতানি কুঁদ ব্যারেজ থেকে। সোমবার সন্ধেয় আরও ১.৪৩ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার পরে আরও বাড়তে শুরু করে যমুনার জল।
আজ পর্যন্ত এত পরিমাণ জল কখনও ছাড়া হয়নি বলে জানিয়েছে দিল্লির সেচ দফতর। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও পাঞ্জাব এখনও পর্যন্ত বন্যা কবলিত। দিল্লির সেচ দফতরের দাবি, এর পরে আরও জল ছাড়লে খোদ দিল্লি শহরেও জল ঢুকে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে দিল্লি-সহ গোটা উত্তর ভারতে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় দফায় দফায় আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীদের এলাকা খালি করার নির্দেশ আগেই জারি করেছে প্রশাসন। আগামী ৪৮ এলাকা নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।
আগাম বিপদ আঁচ করতে পেরে যমুনার উপরে লোহার পুলে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল দিল্লির ট্র্যাফিক পুলিশ। প্রশাসনের তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, পুলিশের পরবর্তী নির্দেশ না বেরোনো পর্যন্ত সব যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
যমুনার জন্য জলের বিপদসীমা ২০৫.৩৩ মিটার। ইতিমধ্যেই সে জল বইছে ২০৫.৯৪ মিটার দিয়ে। অর্থাৎ বিপদ সীমার চেয়ে .৬১ মিটার বেশি উঁচু দিয়ে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৭ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে জলস্তর।
ইতিমধ্যেই ২১২০টি অস্থায়ী তাঁবুর ব্যবস্থা করেছে দিল্লি সরকার। যমুনার তীর ছেড়ে আসা বাসিন্দাদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে শিবিরে। ২৩ হাজার ৮৬০ জন ঘরছাড়া হতে পারেন বলে আশঙ্কা সরকারের। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল দিল্লিবাসীদের কাছে অনুরোধ করেছেন, এই দুর্যোগে তাঁরা যেন নিরাপদ আশ্রয় বেছে নেন আগে থেকে।