জইশ ই মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে প্রস্তাবে চিনের ভেটো দেওয়া নিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতে। বৃহস্পতিবার সকালেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে এত বন্ধুত্ব করলেন, তাতে লাভ কী হল? রাহুলের মন্তব্য, মোদী আসলে শি-কে ভয় পান। এদিন বেলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, চিনের আচরণে সারা দেশ দুঃখ পেয়েছে। কিন্তু রাহুলের এত আনন্দ হচ্ছে কেন? তাঁর বক্তব্য দিয়ে তো পাকিস্তানের খবরের কাগজে হেডলাইন হবে।
রাহুল টুইটারে অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্বল। সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগের জবাব দেন রবিশংকর প্রসাদ। তিনি বলেন, কোনও দেশের বিদেশ নীতি টুইটারে ঠিক হয় না। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁর পালটা অভিযোগ, প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্যই চিন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে পেরেছিল।
নিরাপত্তা পরিষদে যে দেশগুলি স্থায়ী সদস্য, তারা ভেটো দিয়ে যে কোনও প্রস্তাব নাকচ করে দিতে পারে। চিন পর পর চার বার ভেটো দিয়ে মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করতে দেয়নি।
কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের একটি বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে রবিশংকর প্রসাদ বলেন, ১৯৫৩ সালে আমেরিকা চেয়েছিল, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য হোক। কিন্তু নেহরু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। তিনি চেয়েছিলেন, স্থায়ী সদস্য হোক চিন। আর একবার সোভিয়েত রাশিয়া নেহরুকে একই অনুরোধ করেছিল। কিন্তু সেবারও তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, নেহরু দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছেন। কেন তিনি ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনাও হয়েছিল বিস্তর।
বিজেপি আরও অভিযোগ করেছে, গোপনে অন্তত দু’বার চিনের মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন রাহুল। একবার মানস সরোবর যাত্রার সময়। আর একবার ডোকলাম নিয়ে দুই দেশের বিরোধের সময়।
রবিশংকর প্রসাদ এদিন রাহুলের উদ্দেশে বলেন, আপনি তো চিনের সরকারের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ। আপনি তো চেষ্টা করতে পারতেন যাতে চিন মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব সমর্থন করে।
এর আগে চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগের জবাব দিয়ে রাহুল বলেন, চিনের দূতের সঙ্গে দেখা করার অধিকার তাঁর আছে। তিনি টুইট করে বলেছিলেন, আমি চিনের দূত বাদে ভুটানের দূতের সঙ্গেও দেখা করেছি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমার ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। তাই বিদেশী দূতদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম।