রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরে জঙ্গিদের আনাগোনার খবর আগে ছিল। তবে শরণার্থীদের মধ্যে জেহাদিরা কতটা জাল বিস্তার করেছে তা নিয়ে সংশয় ছিল। এবার পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রকাশ্যে এনে এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার জঙ্গি।
সদ্য রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচ ভেল। সেখানে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় তিন হাজার হারাকাহ আল-ইয়াকিন গ্রুপের (এআরএসএ) জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়েছে। গোপনে তারা ক্যাম্পের ভিতর গুমখুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার-সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক জঙ্গিকে উদ্ধৃত করে ডয়েচ ভেল দাবি করেছে, সন্ত্রাসবাদীদের অনেকেই সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মায়ানমারে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জঙ্গি সদস্য আরও জানায়, তাদের কেউ মদত দিচ্ছে না। পর্যাপ্ত অস্ত্র পেলে তারা মায়ানমারে গিয়ে ফের যুদ্ধ করবে। এআরএসএ-এর অন্তত ৩০টি গ্রুপ ক্যাম্পগুলিতে সক্রিয় আছে। ক্যাম্পের মধ্যে তারা অন্যান্য রোহিঙ্গাকে নিজেদের দলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
ক্যাম্পগুলিতে প্রকাশ্যে ওই জঙ্গি সংগঠনের নাম নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলেই তাকে হয় গুম করে ফেলা হচ্ছে, নয় খুন। পরিত্রাণ পান না তার পরিবারের কোনও নারী বা শিশুও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোহিঙ্গা মহিলা জানিয়েছে, গত মাসেই হারাকাহ আল-ইয়াকিন গ্রুপের কয়েকজন সদস্য তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছে। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। এই হারাকাহ আল-ইয়াকিনই ২০১৬ সালে নাম পরিবর্তন করে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নাম নিয়েছে।
সংগঠনের সদস্যরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের ইসলামিস্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির কাছ থেকে মদত পায় বলেও জানা গিয়েছে। যদিও ডয়েচ ভেলের প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল কালাম আবদুল মোমেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশে কোনও রোহিঙ্গা জঙ্গি নেই। যদি কাউকে পাওয়া যায়, তবে তাকে গ্রেপ্তার করে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।