আর পাঁচ বছর, ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতকে ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতিতে পরিণত করা কঠিন হলেও তা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি ভবনে শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই কাজে প্রতিটি রাজ্য সরকারের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রফতানির দিকে নজর দিতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে।
নীতি আয়োগের এই বৈঠকে প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে যাননি। যাননি তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংও।
মোদী নীতি আয়োগের বৈঠকে বলেন, প্রতিটি রাজ্যকে জেলা স্তর থেকে নিজেদের গড় জাতীয় উৎপাদন বাড়ানো ও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোর দিকে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশের জিডিপি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান অঙ্গ হলো রফতানি বাড়ানো। এর জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে একযোগে কাজ করতে হবে ।
পাশাপাশি, আগামী ২০২৪-এর মধ্যে গ্রামে গ্রামে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জলের সংরক্ষণ খুব জরুরি বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও ২০২৫-এর মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মা দূর করতেই হবে বলে জানান মোদী। তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় যে সব রাজ্য সরকার যোগদান করেনি, তারা যেন ওই প্রকল্পে যোগ দেয়। দেশে কৃষিক্ষেত্রেও সংস্কার আনতে উচ্চপর্যায়ের একটি টাস্ক ফোর্স গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে নীতি আয়োগের বৈঠকে। সেই টাস্ক ফোর্স আগামী ২-৩ মাসের রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানান নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে যাবেন না।
তিন জন বাদে বাকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, মন্ত্রী ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সচিবরা উপস্থিত রয়েছেন রাষ্ট্রপতি ভবনের এই বৈঠকে। দ্বিতীয় মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই প্রথম নীতি আয়োগের বৈঠক। প্রথম মোদী সরকারের সময়েই প্ল্যানিং কমিশন তুলে দিয়ে নীতি আয়োগ তৈরি করা হয়। নীতি আয়োগ তৈরি হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে পঞ্চম বৈঠক হচ্ছে।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, নীতি আয়োগের কোনও গুরুত্বই নেই। তাঁর কথায়, “ওখানে কী করতে যাব! ভাষণ শুনতে! ওঁদের ভাষণ শোনার আমার কোনও দরকার নেই।” পর্যবেক্ষকদের মতে, কেন্দ্রের ডাকা এই ধরনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতির ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন করেছেন তিনি। তবে গত বছর জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদের একটি বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছেন মমতা। অন্য সময় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বা অন্য কোনও প্রতিনিধিকে পাঠান মমতা। কিন্তু নীতি আয়গের বৈঠকে সেই সুযোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রীদেরই যেতে হয় এই বৈঠকে।