বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে, নিয়ন্ত্রণে এসেছে কোভিড। এদিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের মঞ্চে বলেন, করোনাকে জয় করেছে ভারত। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, ভারতে ভয়ংকর রূপ নেবে অতিমহামারী। কিন্তু তা হয়নি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত ভারতে তৈরি দু’টি ভ্যাকসিন মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে আরও মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন আসবে।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “গতবছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, বিশ্ব জুড়ে অতিমহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। এদেশে সুনামির মতো আছড়ে পড়বে করোনা। তাঁদের ধারণা ছিল, ভারতে ২০ লক্ষ মানুষ করোনায় মারা যাবেন। কিন্তু মানুষের সহায়তায় আমরা সেই আশঙ্কা বাস্তব হতে দিইনি।”
মোদীর দাবি, যে দেশগুলি সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে, ভারত তাদের অন্যতম। ভারতে বিশ্বের ১৮ শতাংশ মানুষ বাস করেন। এদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় সারা বিশ্বই বিরাট বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
টিকাকরণের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিনেশন প্রকল্প চালু হয়েছে। মাত্র ১২ দিনে ২৩ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী টিকা নিয়েছেন। ভারত থেকে অন্য দেশেও ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। সেই সব দেশের মানুষও করোনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার জানা যায়, দেশের পাঁচভাগের এক ভাগ জেলায় গত এক সপ্তাহে নতুন সংক্রমণ নেই।
বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় আমেরিকার পরেই রয়েছে ভারত। দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সংক্রমণ শিখরে পৌঁছেছিল। তারপর থেকেই তা কমতে শুরু করেছে। দেশে একাধিক জায়গায় হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন বলেন, “ভারত সফল ভাবে কোভিড অতিমারীকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজারেরও কম আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতের মোট ৭১৮টি জেলার মধ্যে ১৪৬টি জেলায় গত এক সপ্তাহ ধরে একজনও আক্রান্ত হননি। ১৮টি জেলায় গত দু’সপ্তাহ ধরে কোনও আক্রান্ত নেই। দেশের কোভিড গ্রাফ স্থিতিশীল হয়ে গিয়েছে।”
দেশে সংক্রমণের হার কমে যাওয়ার পরেই এবার সুইমিং পুল সবার জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নির্দিষ্ট বিধি মেনে সব কিছুই ধীরে ধীরে খুলে গিয়েছে। অবশ্য বেশিরভাগ রাজ্যেই এখনও স্কুল-কলেজ খোলেনি। তবে আগামী দিনে তাও খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধীরে ধীরে সব কিছু খুললেও এবং টিকাকরণ শুরু হলেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।