শিবাজী মহারাজের জন্মদিনে শ্রদ্ধা
শিবাজীর গুরু ছিলেন রামদাস স্বামী, যার জন্য সাতরা দুর্গ জয় করার পর সজ্জনগড়ে আশ্রম নির্মাণ করে দিয়েছিলেন শিবাজী (১৬৭৩)। গুরুকে অঢেল ধন আর ঐশ্বর্য দান করলেও তাঁকে দৈনিক ভিক্ষায় যেতে দেখে শিবাজী অত্যন্ত মর্মাহত হলেন। গুরুদেবের সাধ মেটাবেন, পণ করলেন শিবাজী। রাজ্যের যা কিছু সম্পদ, এমনকি গোটা মহারাষ্ট্র রাজ্যটাই গুরুকে দান করার শপথ নিলেন। এরজন্য যাবতীয় দলিল – দস্তাবেজ প্রস্তুত করলেন শিবাজী, তৈরি হল দানপত্র। পরদিন সকালে গুরু রামদাস যখন ভিক্ষাপাত্র নিয়ে বের হবেন, স্বয়ং মারাঠা রাজ তথা হিন্দু-অস্মিতা শিবাজী গুরুর পদতলে সমর্পণ করলেন সমগ্র রাজ্য। গুরু শিষ্যকে বুকে টেনে নিয়ে মৃদু হেসে বললেন, “তোমার দান আমি গ্রহণ করলাম; এখন থেকে তুমি আমার গোমস্তা হলে। ভোগসুখী ও স্বেচ্ছাচারী রাজা না হয়ে বিশ্বাস করো, তুমি যেন এক জমিদার প্রভুর বিশ্বাসী ভৃত্য হয়ে রাজকার্য পরিচালনা করছো। এমনই রাজ্যশাসনের দায়িত্বজ্ঞান যেন তোমার থাকে।” ছত্রপতি শিবাজী মেনে নিলেন হিন্দু যোগীর সর্বাধিনায়কত্ব। সেই থেকে শিবাজীর রাজ্য পরিণত হল এক হিন্দু সন্ন্যাসীর ভাবাদর্শে-চালিত রাজ্য, এক যোগী-রাজ্য। সন্ন্যাসীর গেরুয়া-বসন দিয়েই নির্মিত হল রাজপতাকা।
ড. কল্যাণ চক্রবর্তী