দীর্ঘদিনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন তাঁরা। ভারতের হিন্দু উদ্বাস্তুরা নতুন দিশার দিকে এগোচ্ছে। সেই দিশা দেখাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপি সদিচ্ছাতেই দেশের ৫ কোটি হিন্দু উদ্বাস্তু এবং একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের দু’ কোটি উনোসত্তর লক্ষ বাঙালি উদ্বাস্তু মানুষ নিজেদের স্থায়িত্বের দিকে এগোচ্ছে, এমনটাই জানালেন নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি সুবোধ বিশ্বাস। তিনি বলেন দীর্ঘ আন্দোলনের পথে হেঁটে, রীতিমত জেলে খেটে তবে নির্দিষ্ট দিশায় এগানো গিয়েছে। হিন্দু উদ্বাস্তুদের নির্মম দশার জন্য তিনি সরাসরি পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে দায়ী করেন। এ বিষয়ে কটাক্ষ করে বলেন, কংগ্রেসের পাপের ফল এই উদ্বাস্তু সমস্যা। তবে ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-এর সঙ্গে প্রথমবার তাঁর কথা হয়। সে সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। এবং বলেন ‘উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পক্ষে তিনি।’

শনিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানান উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি সুবোধ বিশ্বাস। তিনি বলেন, দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে দ্বিচারিতা চলছে। সব দলই নাগরিকত্ব বিলের মৌখিক সমর্থন করলেও রাজ্যসভায় তা পাশ হতে দেয়নি। এমনকি রাজনৈতিক ইশতেহারেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে খসড়া প্রকাশ করেনি কোনও দল। একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের ইশতেহারে নাগরিকত্ব বিলের খসড়া প্রকাশ করেছে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২০১৯-এ তারা সরকার গড়লে এই বিলের নিষ্পত্তি হবে। এ বিষয়ে উদ্বাস্তু সমিতির সভাপতি সরসরি বলেন, হিন্দু উদ্বাস্তুদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে বিজেপির শক্তি বাড়াতে হবে। তিনি আশাবাদী, কেন্দ্রে নতুন সরকার এলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই বিল পাশ হবে। ইতিমধ্যেই বিজেপি বিলটি লোকসভায় পাশ করিয়েছে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে রাজ্যসভায় তা পাশ করানো যায়নি।

২০১৬ নাগরিকত্ব বিল সংশোধন উদ্বাস্তুদের কাছে মৃত সঞ্জীবনীর মত ছিল। এই বিল পাশ হলে উদ্বাস্তুরা সাংবিধানিক অধিকার পাবেন। এই বিল পাস হলে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী নিষ্পাপ দুধের শিশু, মহিলা, বৃদ্ধরা অমানবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবেন। আইনের বেড়াজালে আটকে প্রতিনিয়ত উদ্বাস্তুরা শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছেন। এই বিল পাশ হলে সেসব আইন আক্ষরিক অর্থেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।

নীল বণিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.