পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময়েই ইমরান খান বলেছিলেন, তিনি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চান। পুলওয়ামা কাণ্ডের পরেও তিনি একাধিকবার শান্তির কথা বলেছেন। সেকথা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বললেন, অনেকে বলে, ইমরান খান একজন খাঁটি স্টেটসম্যান। তিনি নাকি খুব উদার। সত্যিই যদি তিনি উদার হন, মাসুদকে আমাদের হাতে তুলে দিন না। দেখি তিনি কেমন উদার।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন। মৌলানা মাসুদ আজহারের সংগঠন জইশ ই মহম্মদ ওই ঘটনার দায় স্বীকার করে। তারপরে মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করার দাবিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে যায় ভারত। কিন্তু চিন ভেটো দিয়ে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। তার পরদিন সুষমা সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশেই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলতে পারি। সন্ত্রাস আর আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।
পাকিস্তানের উদ্দেশে বিদেশমন্ত্রী বলেন, আপনারা কেবল জইশকে আপনাদের দেশে ঘাঁটি বানাতে দেননি, তাদের অর্থ দিয়ে সাহায্যও করেন। তারা আপনাদের দেশ থেকে প্রতিবেশীদের ওপরে হামলা চালায়। প্রতিবেশী দেশ তাদের শাস্তি দিতে গেলে আপনারা জঙ্গিদের হয়ে পালটা আক্রমণ করেন।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার বদলা নেওয়ার জন্য ভারতের বিমান পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে বালাকোটে বোমা বর্ষণ করে এসেছিল। তারপরে পাকিস্তানের কয়েকটি বিমান ভারতের আকাশসীমা পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। সীমান্তে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করতে থাকে পাকিস্তান। তাতে বেশ কয়েকজন হতাহত হন। সুষমা এদিন পরোক্ষে ওই ঘটনার কথাই উল্লেখ করেছেন। ইমরানের উদ্দেশে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কারণ তারা বার বার দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ করে দিয়েছে।
পুলওয়ামার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক দেশের বিদেশমন্ত্রী আমাকে ফোন করে অতজনের মৃত্যুর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। ভারতের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই সঙ্গে একথাও বলেছিলেন, আমরা আশা করি ভারত এমন কিছু করবে না যাতে টেনশন বৃদ্ধি পায়।
বিদেশমন্ত্রীদের সুষমা কী বলেছিলেন?
তিনি জানান, আমি তাঁদের বলেছি, আমরা কখনই এমন কাজ করব না যাতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ফের যদি সন্ত্রাসবাদীরা হামলা করে, ভারত তাকে নিছক ভাগ্য বলে মেনে নেবে না।
বালাকোটে বিমান হানা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা কেবল জঙ্গিদের ঘাঁটিতেই বোমা ফেলেছি। কিন্তু পাকিস্তানের মিলিটারি কেন জঙ্গিদের হয়ে আমাদের আক্রমণ করছে?