কলকাতার শিয়ালদা এলাকা আজ হিন্দু প্রতিবাদীদের রক্তে লাল হয়ে উঠল

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের মিছিলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কান্ড হল শিয়ালদা চত্বরে। বিনা অনুমতিতে মিছিল করা হচ্ছে এই অভিযোগে বাধা দেয় পুলিস। এর পরই সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে বিবাদ বাধে পুলিসের। সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতার করতে এলাকার বিভিন্ন গলিতে শুরু হয় তল্লাশি। শেষে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে শুরু হয় মিছিল। সেই মিছিলও মৌলালির কাছে আটকে দেয় পুলিস। পুলিসের বিরুদ্ধে লাঠি চালানোর অভিযোগ করেছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ।

সংগঠনের কর্মীকে প্রকাশ্যে গুলি করায় পথে নামল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। মেটিয়াবুরুজের ঘটনার প্রতিবাদে শিয়ালদহে পথ অবরোধ করল সংগঠনের কর্মীরা। পরে এনআরএস হাসপাতাল ছাড়িয়ে সেই বিক্ষোভ চলে ধর্মতলায়। বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।

বুধবার শিয়ালদা থেকে রানি রাসমণি রোড পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। পুলিসের তরফ থেকে বলা হয় যে মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। সকাল ১০টা থেকে শিয়ালদা স্টেশন চত্বরে জড়ো হতে থাকেন সংগঠনের সমর্থকরা। বেলা ১২টা নাগাদ মিছিল শুরু করার চেষ্টা হলে বাধা দেয় পুলিস। পালটা পুলিসের বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা। এর পরই পুলিস লাঠি চালায় বলে অভিযোগ।

তবে অন্য দিকে সংগঠনের একদল সদস্য পৌঁছে যায় এনআরএস হাসপাতালের সামনে। সেখান থেকেই মিছিল শুরু করে তারা। মৌলালি পৌঁছলে সেখানেও পুলিস তাদের বাধা দেয়। আরেকপ্রস্ত ধস্তাধস্তি বাঁধে এনএন ব্যানার্জি রোডের মোড়ে।

প্রসঙ্গত, চিকিৎসাধীন বীরবাহাদুরকে দেখতে গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় হাসপাতালে ছুটেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সব্যসাচী দত্ত-সহ বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

যা হোক, মিছিলের অনুমতি নেই বলে জানিয়ে শিয়ালদহেই গ্রেফতার করা হয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্য-সমর্থকদের।

মিছিলে বাধা দেওয়ার কঠোর নিন্দা করে হিন্দুত্ববাদী দল গুলি। শান্তিপূর্ণ জমায়েত এবং প্রতিবাদ মিছিল কেন করতে দেবে না পুলিশ? কেন মিছিল শুরুর আগেই সকলকে গ্রেফতার করে নেওয়া হবে? প্রশ্ন তোলা হয় সঙ্ঘের তরফ থেকে।

কিন্তু এতেই শেষ হয়নি গোটা পর্বটা। পুলিশ যে শিয়ালদহ থেকে মিছিল বেরতে দেবে না, হিন্দু জাগরণ মঞ্চও তা জানত। তাই শিয়ালদহে জমায়েতকারীরা গ্রেফতার হয়ে যেতেই এনআরএস হাসপাতালের সামনে থেকে মঞ্চের আর এক দল কর্মী মিছিল শুরু করে ধর্মতলার দিকে এগোতে থাকেন।

পুলিশ কিন্তু এই দ্বিতীয় মিছিলের জন্য প্রস্তুত ছিল না। মিছিলটা মৌলালির কাছে পৌঁছতেই সেখানে উপস্থিত কয়েক জন পুলিশকর্মী তা থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েকশো মিছিলকারীকে ওই ক’জন মিলে থামাতে পারেননি।

স্ট্র্যাটেজি বদলে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ যে এনআরএসের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেছে, সে খবর ইতিমধ্যেই পৌঁছেছিল কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে। তাই দ্রুত এস এন ব্যানার্জি রোডে ছুটে যান ডিসি পদমর্যাদার এক আধিকারিক। প্রস্তুতি না থাকায় তাঁর সঙ্গেও বড় বাহিনী ছিল না। কিন্তু ওই ডিসির নির্দেশে পুলিশ লাঠি চালিয়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের সঙ্গে তখন প্রিজন ভ্যানও ছিল না। মিছিলকারীদের গ্রেফতার করে পথচলতি ট্যাক্সিতে তোলে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.