ধূপগুড়িতে উপনির্বাচনের আগে ধাক্কা তৃণমূলে, বিজেপিতে যোগ প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়ের

ধূপগুড়িতে উপনির্বাচন ৫ সেপ্টেম্বর। তার ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন ওই বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়। রবিবার সকালে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। মিতালির অভিযোগ, ২০২১ সালে ভোটে হারার পর থেকে তৃণমূল তাঁর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ রাখেনি। যদিও শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারমঞ্চে তাঁকে দেখা গিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, শনিবারই ধূপগুড়িতে অভিষেকের প্রচারমঞ্চে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি দীপেন্দ্রনাথ প্রামাণিক। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, সেই সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন মিতালিও। তার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলকে পাল্টা জবাব দিল বিজেপি সেই মিতালিকেই ছিনিয়ে নিয়ে।

২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে ধূপগুড়ি কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মিতালি। ২০২১ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন বিধায়ক। গত বিধানসভা ভোটেও তাঁকেই টিকিট দেয় তৃণমূল। কিন্তু বিজেপির বিষ্ণুপদ রায়ের কাছে হার স্বীকার করতে হয় মিতালিকে। সেই বিষ্ণুপদের মৃত্যুতে ধূপগুড়িতে উপনির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু এ বার মিতালিকে আর টিকিট দেয়নি তৃণমূল। তাঁর বদলে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন নির্মলচন্দ্র রায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ বার টিকিট না পাওয়ায় দলের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন মিতালি। তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালে হারের পর থেকেই তাঁকে দল একপ্রকার ব্রাত্য করে রেখেছিল। মিতালির ক্ষোভের আঁচ পেয়েছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও। সে জন্যই রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম নেতা অরূপ বিশ্বাস ধূপগুড়িতে প্রচারে গিয়ে আলাদা করে মিতালির ক্ষোভ নিরসনের চেষ্টাও করেছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, শনিবার ফণীর মাঠে অভিষেকের জনসভার মঞ্চেও হাজির ছিলেন মিতালি। তার পরেই রবিবার সকালে দলবদল করলেন তিনি। মিতালির হাতে পদ্মপতাকা তুলে দিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘মিতালি জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম পরিচিত পরিবারের সদস্য। তিনি তৃণমূলে থাকতে পারছিলেন না। মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে তিনি তাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন। তাঁকে স্বাগত জানাই। আগামিদিনে মিতালিদির পদাঙ্ক অনুসরণ করে সকলেই বিজেপিতে আসবেন। তৃণমূলের পতন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।’’

তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি ব্লকে ব্লকে যোগদান মেলা আয়োজন করেছিল। তার কী ফল হয়েছে তা রাজ্যবাসী জানেন। ভোটের আগে অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ানোর প্রবণতা ওদের নেতাদের আছে। মিতালি যদি মনে করেন, বিজেপিতে গিয়ে তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে, তা হলে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই। কিন্তু মিতালির দলত্যাগে তৃণমূলের কিছু যাবে আসবে না। রাজ্য রাজনীতিতেও কিছু বদল হবে না।’’

উপনির্বাচনে তৃণমূল টিকিট না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মিতালি। যে ক্ষোভের প্রলেপ দিতে পারেনি অরূপের দৌত্যও। ঠিক ভোটের মুখে দলবদল করে তারই পাল্টা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.