বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই আশা জাগিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ‘ভ্যাকসিন’। এই ‘ভ্যাকসিনটি’র প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল আশানুরূপ ফল দিয়েছে। এবার এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ফলের অপেক্ষা। আশানুরূপ ফল পেলেই এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করা শুরু করে দেবে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট। হ্যাঁ এই ভারতীয় সংস্থাটিই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বিনিয়োগ করেছিল। এই টিকা উৎপাদনের দায়িত্বও তাঁদের কাঁধেই।
কিন্তু সম্ভাব্য যে ভ্যাকসিনের কথা বলা হচ্ছে, সেটা সহজলভ্য হবে তো? সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে হবে তো? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে আম আদমির মনে। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে ভারতে অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় ডিএনএ ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (Serum Institute of India)। শুরু থেকেই এই প্রতিষেধকটি নিয়ে আশাবাদী ছিলেন সেরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা (Adar Poonawalla)। Lancet-এর রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরই তিনি এই ভ্যাকসিন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিলেন। জানিয়ে দিলেন, সব ঠিক থাকলে নভেম্বরেই ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ ‘করোনা ভ্যাকসিনে’র ডোজ বাজারে চলে আসবে। সেরামের কর্ণধার জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থা যে ‘ভ্যাকসিন’ তৈরি করবে তার ৫০ শতাংশ ভারতীয় বাজারের জন্য বরাদ্দ থাকবে। বাকি ৫০ শতাংশ বাকি বিশ্বের জন্য। আদর পুনাওয়ালা বলছিলেন, “আমাদের বুঝতে হবে এটা গোটা বিশ্বের সমস্যা। তাই গোটা বিশ্বের সুরক্ষাটাও দরকার।” সেরামের কর্তা আশ্বস্ত করেছেন দেশে এই ভ্যাকসিনের ডোজের অভাব হবে না। আগামী বছরের প্রথম চার মাসের মধ্যেই ৩০-৪০ কোটি টিকা বাজারে চলে আসবে।
কিন্তু এই টিকার দাম কেমন হবে? সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকবে তো? পুনাওয়ালা বলছিলেন,”এটা যতটা সম্ভব কম দামে দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। আজ একটা করোনা পরীক্ষা করতে আড়াই হাজার টাকা লাগে। রেমডিসিভিরের মতো ওষুধ কিনতে হাজার হাজার টাকা লাগে। আমরা মোটামুটি এক হাজার টাকা বা তারও কিছু কম দামে এই প্রতিষেধক তৈরি করার চেষ্টা করছি। তবে আমার মনে হয় সাধারণ মানুষকে টাকা দিয়ে এই টিকা কিনতে হবে না। সরকারই তা কিনে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলি করবে।”