জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন টিকার মধ্যে কার্যকারিতা নিয়ে তুল্যমূল্য লড়াই! করোনা (Coronavirus) থেকে কে দীর্ঘকালীন সুরক্ষা দেবে, তাই নিয়েই বিশ্বজোড়া বিতর্ক। চায়ের দোকান থেকে শ্মশান, আমজনতা থেকে চিকিৎসক সর্বত্রই তর্কের ঝড়। কোভিশিল্ড আর কোভাক্সিনের মধ্যে তো মোহনবাগান – ইস্টবেঙ্গলের লড়াই! এমন পরিস্থিতিতে একদল বিজ্ঞানীর দাবি, কোভিশিল্ড করোনা থেকে আজীবন সুরক্ষা দেবে। অর্থাৎ, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার দুটো ডোজ নিলেই কেল্লাফতে।
Vaccination
করোনা পরিস্থিতিতে কার্যত জবুথবু গোটা বিশ্ব। রোগ কোন টিকা বেশি কার্যকরী, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে চলেছেন ক্রমাগত। উত্তর পেতে সুইজারল্যান্ড ও ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা শুরু করেন। গবেষণা করে ঠিক কী তথ্য সামনে এল, তা সম্প্রতি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষকদের দাবি, অ্যাডিনো ভাইরাস ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে কোভিশিল্ড (Covishield)। এই কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজ আজীবন একজন মানুষকে করোনার থাবা থেকে সুস্থ রাখতে পারে। কোভিশিল্ডকে বেশি কার্যকরী হিসাবে মান্যতা দেওয়ার পাশাপাশি মানানসই যুক্তিও ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, অ্যাডিনো ভাইরাস মানবদেহের শারীরিক গঠনের সঙ্গে অত্যন্ত পরিচিত। অ্যাডিনো ভাইরাসের (Adenovirus) খোলের মধ্যে করোনার স্পাইক প্রোটিন ভরে কোভিশিল্ড তৈরি করা হয়েছে। টিকা নিলে অ্যাডিনো ভাইরাস মানবদেহের ফাইব্রোব্লাস্টিক রেটিকিউলাস সেলে ঢুকে পড়ে। এই ধরনের কোষ যথেষ্ট দীর্ঘায়ু। তা শরীরে ঢোকার পর আই এল ৩৩ সাইটোকাইন নিঃসরণ হয়। যা মানবদেহে মজুত টি সেলের ট্রেনিংয়ের পরিবেশ তৈরি করে দেয়। টি সেলকে শেখানো হয়, যে চেহারা নিয়েই করোনা শরীরে প্রবেশ করুক তাকে চিনে নিয়ে খতম করে দেবে টি সেল। রীতিমতো ক্যাম্প বসিয়ে এই প্রশিক্ষণ চলে। যার জেরে কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজই একজন মানুষকে করোনা থেকে আজীবন সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
Vaccine
গবেষণালব্ধ ফলকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছেন ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডাঃ সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। তাঁর পর্যবেক্ষণ, টিকা নেওয়ার পর শরীরে এন্টিবডির জন্ম হয়। উদ্দীপ্ত হয় মেমোরি টি সেল। সময়ের সঙ্গে এন্টিবডির মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু রয়ে যায় টি সেলের সুরক্ষা। কোভিশিল্ড এই ব্যাপারেই মোডার্না বা ফাইজারের মতো আরএনএ টিকাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে, এমনই দাবি অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের।