গোটা বিশ্বে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস (Corona virus)। বাদ যায়নি ভারতও। আমাদের দেশে এখন প্রায় ২০০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা দেশ জুড়ে আতঙ্কের মহল সৃষ্টি হয়েছে। এই আতঙ্কের মাঝে বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য সরকার উচিৎ পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) এই কটা দিন কাজ না করার জন্য দিন মজুর আর গরিব মানুষের বেতন না কাটারও আবেদন করেছেন।
আরেকদিকে দেশের হাজার হাজার ডাক্তার, হাসপাতাল কর্মী, এয়ারপোর্ট স্টাফ সমেত সুরক্ষা বাহিনী নিরলস কাজ করেই চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আগামী রবিবার দেশবাসীকে জনতা কারফিউ (People’s curfew) পালনের আবেদন জানিয়েছেন। এমনকি তিনি এও বলেছেন যে, আগামী রবিবার সন্ধ্যে বেলায় নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সেই সব মানুষদের জন্য একবার হাততালি, কাসর ঘণ্টা অথবা থালা বাসন বাজান যারা এতদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন করোনার সাথে যুদ্ধে জয় হওয়ার জন্য।
ঠিক এটার একটা উল্টো চিত্র ধরা পড়ল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার রঘুনাথগঞ্জ (Raghunathganj) এলাকা থেকে। সেখানে থানার বাইরে করোনা ভাইরস নিয়ে সচেতনতা শিবির চলছিল। আর সেই সচেতনতা শিবিরের প্রধান বক্তা ছিলেন এক মৌলবি। ওই অনুষ্ঠানে থানার বিভিন্ন পদাধিকারদের বসে থাকতেও দেখা যাচ্ছে।
ভিডিওতে মৌলবি বলছেন ক= কোরান, র=রোজা আর ন= নামাজ। এগুলো করলে করোনা থেকে আপনি সহজেই মুক্তি পাবেন। উনি বলছেন, আমাদের কাছে অনেক জিন, ভুতের ধরা রোগী যান। ওই রোগীর রোগ তাড়াতে আমরা থালা বাসন বাজাই। তারপর তাঁদের রোগ পালায়। উনি বলছেন, এই করোনাও সেরকমই ভুতে ধরা রোগ। আমরা যদি কোরান পড়ি, রোজা রাখি আর নামাজ আদা করি তাহলে এই ভূত আমাদের ধরবে না।
পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের কি নিজেদের শিক্ষা, দীক্ষা লোভ পেয়েছে? তা না হলে এই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কি প্রমাণ করতে চাইছেন? ঘটনাটি মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার রঘুনাথগঞ্জ (Raghunathganj) এলাকার। রঘুনাথগঞ্জ থানার ভিতরে চলছে করোনা ভাইরাস সচেতনতা কর্মসূচির। উপস্থিত আছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক পুলিশ অফিসার। তারমধ্যে একজন মৌলবি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বক্তব্য দিচ্ছে। সে পরিষ্কার বলছে ‘ক’ -তে কোরান, ‘র’ -তে রোজা, ‘ন’ -তে নামাজ। অতএব যারা কোরআন পড়বে নামাজ রাখবে তাদের নাকি করুণা ভাইরাস অ্যাটাক করতে পারবেনা। আর এই বক্তব্যের মঞ্চে বসে আছে পশ্চিমবঙ্গের কর্মরত একাধিক পুলিশ অফিসা। এই লজ্জা কার?
ওনার এই বক্তব্য বসে বসে শুনছিলেন থানার পদাধিকাররা। এখন প্রশ্ন হল, ২১ শতাব্দিতেও কি আমাদের এরকম কুসংকারের আঁচল ধরে থাকতে হবে? ক= কোরান, র=রোজা আর ন= নামাজ এগুলো করলেই যদি করোনা পালায়, তাহলে ইরান আর পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে হুহু করে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে কেন?
আপনাদের জানিয়ে দিই, এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সব্যসাচী ভট্টাচার্য (Sabyasachi Bhattacharya) নামের এক যুবক।