পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজ্যের মধ্যে প্রথম বাঁকুড়া শহরের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ‘বায়োমেট্রিক’ পদ্ধতিতে হাজিরা শুরু হল। বুধবার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ কার্যালয়ে এই পদ্ধতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলাশাসক ডাঃ উমাশঙ্কর এস। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্ম্মু, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দোপাধ্যায়, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় সহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলির শিক্ষক শিক্ষিকারা।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষক শিক্ষিকারা সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে যেমন আসেন না ও তেমনি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বেরিয়ে যান। এই অভিযোগ নিত্য দিনের। এই অভিযোগ দূর করতে সম্প্রতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে শিক্ষক শিক্ষিকাদের ‘বায়োমেট্রিক’ হাজিরা পদ্ধতি শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রকল্পে শহরের বাঁকুড়া বালিকা প্রাথমিক, মিশন বালিকা প্রাথমিক, লালবাজার হিন্দু প্রাথমিক, মিশন বালক প্রাথমিক ও বঙ্গ বালক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া কংসাবতী শিশু বিদ্যালয়ও এই ‘পাইলট প্রজেক্টে’ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। শিক্ষকদের ‘বায়োমেট্রিক হাজিরা’ পদ্ধতিতে অভিভাবকদের পাশাপাশি খুশি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক শিক্ষিকারাও। তাদের মতে, পুরোদমে এই পদ্ধতি চালু হলে প্রাথমিক শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের ‘বদনাম’ কিছুটা হলেও ঘুচবে।
উদ্বোধনি অনুষ্ঠান শেষে জেলাশাসক ডাঃ উমাশঙ্কর এস সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে খাতড়া মহকুমা এলাকায় এসএমএস পদ্ধতিতে শিক্ষকদের হাজিরা পদ্ধতি চালু হয়েছে। খুব ভালো সাড়া মিলেছে। আপাতত এই স্কুল গুলিতে শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হলেও পর্যায়ক্রমে জেলার সব কটি স্কুলেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে বলে তিনি জানান।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় বাঁকুড়া জেলা প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সেই মান ধরে রাখার পাশাপাশি আরও সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যাওয়াই এখন অন্যতম লক্ষ্য। কিন্তু একাংশের শিক্ষকের জন্য জেলার ‘বদনাম’ হচ্ছে জানিয়ে বলেন, সেই কারণেই এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামোর অভাবের কারণে প্রতিদিন ‘বায়োমেট্রিক হাজিরা’য় নজরদারি চালানো সম্ভব না হলেও শিক্ষকদের মাসিক ‘রিটার্ন’ জমা দেওয়ার সময় ওই তথ্য জমা দিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।