কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর উপাচার ও মাহাত্ম্য

বাংলায় শারদীয়া দুর্গাপুজোর পর কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। লক্ষ্মী হলেন ধন সম্পত্তির দেবী। ধন সম্পদের আশায় ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষী পূজা হয়ে থাকে।নারী পুরুষ উভয়েই এই পূজায় অংশ গ্রহণ করেন।

কোজাগরী শব্দটির উৎপত্তি ‘কো জাগতি’ অর্থাৎ ‘কে জেগে আছো’ কথাটি থেকে। বলা হয়ে থাকে, ‘যার কিছু (সম্পত্তি) নেই সে পাওয়ার আশায় জাগে, আর ‘যার আছে (সম্পত্তি) সে যাতে তা না হারায় তার জন্য জাগে’। আর সারারাত জেগে লক্ষ্মীর আরাধনা করাই এই পূজার বিশেষ আচার। কথিত আছে কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার দিন দেবী রাত্রে খোঁজ নেন – কে জেগে আছেন? প্রবাদ আছে যে জেগে অক্ষ ক্রীড়া করে, লক্ষ্মী তাকে ধন সম্পদ দান করেন ।

কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার জন্য প্রকৃষ্ট সময় প্রদোষকাল। অর্থাৎ সূর্যাস্ত থেকে দু ঘণ্টা পর্যন্ত যে সময়। যদিও প্রদোষ থেকে নিশীথ পর্যন্ত তিথি থাকলেও সেই প্রদোষেই পূজা বিহিত। কিন্তু আগেরদিন রাত্রি থেকে পরদিন প্রদোষ পর্যন্ত তিথি থাকলে পরদিন প্রদোষেই পূজা করা বিধেয়। আবার আগেরদিন রাতে তিথি থাকলেও যদি পরদিন প্রদোষে তিথি না থাকে তাহলে আগেরদিন প্রদোষেই পূজা করা কর্তব্য।

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজাতে দেখা যায় জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক আচার অনুষ্ঠান। উপচারে ফল মিষ্টি ছাড়াও থাকে মোয়া নাড়ু ইত্যাদি। লক্ষ্মীর আচার অনুষ্ঠানেও দেখা যায় নানা ধরনের তাৎপর্য। কোনও কোনও পরিবারে পূজায় মোট ১৪টি পাত্রে উপচার রাখা হয়। কলাপাতায় টাকা স্বর্ণমুদ্রা, ধান পান কড়ি হলুদ হর্তুকি দিয়ে সাজানো হয় পুজোর স্থানটিকে। কোন কোন স্থানে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে মেলা বসে।

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর ভোগ হিসাবে খিচুড়ি লাবড়া থাকা আবশ্যিক। সঙ্গে প্রসাদে ফলমূল তো থাকেই আর থাকে নারকেল নাড়ু তিলের নাড়ু ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.