রাষ্ট্রপতির নিশানায় চিন, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণে নাম না করে কড়া বার্তা

৭৪তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (Ramnath Kobind)। শুরুতেই বিদেশি শক্তির সঙ্গে লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানান তিনি। একই সঙ্গে শুভেচ্ছা জানান দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ভারতীয়দের। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এদিন নাম না করে চিনের ‘সম্প্রসারণবাদী নীতি’ নিয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। গালওয়ানে শহিদ ভারতীয় সৈনিকদের প্রতি সম্মান জানান তিনি।

করোনা মহামারীর প্রসঙ্গ টেনে এদিন তিনি বলেন, “এবারের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন তেমন জাঁকজমকের সঙ্গে হবে না। এই মারণ রোগের মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকার সঠিক দিশায় পদক্ষেপ করেছে। রাজ্য সরকার ও জনসাধারণের সহযোগিতায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি আমরা। এই মহামারীর সময় আমাদের গরীব ও দুস্থদের কথা মাথায় রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতে গরিবদের জন্য সরকার অনেক পদক্ষেপ করেছে। বিনামূল্যে প্রতিমাসে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ প্রতি মাস রেশন পাচ্ছেন। এর জন্য এক দেশ এক রেশন কার্ড প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।” এদিন করোনা যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে রাষ্ট্রপতি বলেন, “চিকিৎসক, নার্স তথা অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের সীমা পার করে পরিষেবা প্রদান করছেন। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তাঁদের অনেকেই এই রোগের কবলে পড়ে প্রাণ দিয়েছেন।”

এদিন ঘূর্ণিঝড় অমফান নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় অমফান বিস্তর ক্ষতিসাধন করেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ। এহেন সংকট কালে আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।” মহামারীর সময় ভারত বিশ্বের অন্য প্রভাবিত দেশগুলির সঙ্গে রয়েছে এই কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “করোনা মোকাবিলায় আমরা অনেক দেশের পাশে দাঁড়িয়েছি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত থাকবে এবং নিজের পরিচয় বজায় রাখবে। আমরা শুধু নিজেদের কথা ভাবি না, আমরা সকলের পাশে দাঁড়ায়।” একই সঙ্গে, রাষ্ট্রসঙ্গের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্যের আসনে ভরিতের জয় নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কোবিন্দ।

করোনা আবহে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নিয়েও বার্তা দেন রাষ্ট্রপতি। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে বাড়ি বসেই কাজ করা এখন সম্ভব হয়েছে এবং সরকারও সেই পথ অনেকাংশে অবলম্বন করেছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি। সব মিলিয়ে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও বিশ্বে ভারতের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার কথা মনে করিয়ে নিজের ভাষণে ইতি টানেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.