চিনের উস্কানি স্পষ্ট। সেই উসকানিতেই সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েন মেটেনি নেপালের সঙ্গে। তবু নেপালে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ জারি রাখবে ভারত। সোমবারের নয়াদিল্লি কাঠমান্ডু বৈঠকে তেমনই পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, যে যে উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ভারত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে, তা থেকে কখনই সরে আসা হবে না।
সোমবার অষ্টম দফার ওভারসাইট মেকানিজম বা ওএসএম বৈঠক হয় ভারত ও নেপালের মধ্যে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন নেপালে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় মোহন কাটরা ও নেপালের বিদেশ সচিব শংকর দাস বৈরাগী।
আলোচনার মূল বিষয় ছিল নেপালে ভারতের আওতাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের গতি বৃদ্ধি। এর মধ্যে রয়েছে রামায়ণ সার্কিটও। জানা গিয়েছে তেরাই রোডের কাজ ও উন্নয়ন, আন্তঃরাষ্ট্র রেল যোগাযোগ, অরুণ-৩ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, পঞ্চেশ্বর মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট, সেচ প্রকল্প, নেপাল পুলিশ অ্যাকাডেমির নির্মাণ কাজ,মহাকালী নদীর ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণের মতো একাধিক প্রকল্পের কাজ চালাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত।
নেপালের গোর্খা ও নুয়াকোট জেলায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি নতুন করে বানানোর কাজেও সহযোগিতা করছে ভারত। মোট ৪৬,৩০১টি বাড়ি বানানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও মোতিহারি-আমলেখগঞ্জ ক্রস বর্ডার পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের আদানপ্রদান ও বিরাটনগরে চেক পোস্ট তৈরির বিষয়েও কথা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। উল্লেখ্য, এই মোতিহারি-আমলেখগঞ্জ ক্রস বর্ডার পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের পাইপলাইনের উদ্যোগ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ক্রস বর্ডার প্রজেক্ট।
নয়াদিল্লি সূত্রে খবর করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে ভারত নেপালকে সাহায্য করেছে, তার প্রশংসা করেছে কাঠমান্ডু। ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করে কাঠমান্ডুকে সাহায্য করেছে নয়াদিল্লি।
তবে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। একটানা সংঘাত চলছে দুই দেশের। কখনও সীমান্তে সেনা মোতায়েন, কখন ভারতের এলাকাকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত দেখিয়ে বিতর্কিত ম্যাপ তৈরি, কখনও রাম জন্মভূমি নেপালে অবস্থিত বলে বিতর্ক তৈরি। একটার পর একটা সংঘাতে ক্রমশ খারাপ হয়েছে ভারত নেপাল সম্পর্ক। এই বৈঠকে উঠে আসেনি সীমান্ত সমস্যার মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
উল্লেখ্য লিপুলেখ,কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদের এলাকাভুক্ত দেখিয়ে বিতর্কিত ম্যাপ প্রকাশের পর এই প্রথম বৈঠকে দুই দেশ। তবে এই বিতর্কিত বিষয় এবারের বৈঠকে জায়গা পায়নি।