করোনা (Coronavirus) সংক্রণ রুখতে এবার পুরো শহরেই লকডাউনের চিন্তাভাবনা শুরু করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গত কয়েকদিনে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে এই জেলায়। একই অবস্থা বর্ধমান (Burdwan) শহরেরও। ইতিমধ্যে শহরের ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে লকডাউন করা হয়েছে। পাশাপাশি, শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা বাঁশের ব্যারিকেডে ঘিরে দেওয়া হয়েছে, প্রায় লকডাউনের মতোই। সোমবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শহরজুড়ে লকডাউন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় দুই পুলিশ অফিসার, দুই কনস্টেবল করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের ও মনোরোগ বিভাগের একজন করে চিকিৎসকের শরীরে মিলেছে করোনার জীবাণু। এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মী-সহ মেডিক্যালের মোট সাতজন একই দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মনোরোগ বিভাগের আউটডোর ও ক্লিনিক্যাল মেডিসিন বিভাগের আউটডোর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কালনার এক চিকিৎসকেরও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে এদিন। সংক্রমণ বেড়ে চলায় জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের প্রত্যেক কর্মী ও আধিকারিককে COVID পরীক্ষা করানো হচ্ছে। সোমবার জেলা প্রশাসনের কর্মী-আধিকারিকদের করোনা টেস্ট করানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, পূর্ব বর্ধমানে সোমবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চারশো ছুঁইছুঁই। যার মধ্যে অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো পেরিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছে COVID হাসপাতালের অপ্রতুল শয্যা সংখ্যা। যা প্রায় পূর্ণ। জেলাশাসক বিজয় ভারতী আগেই জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে বিশেষ ইউনিট খোলার কথা ভাবা হচ্ছে। কোনও বিল্ডিং ফাঁকা করে সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে কোনও বেসরকারি হাসপাতালকে COVID হাসপাতাল করা যায় কি না, সেই পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
বর্তমানে জেলার একমাত্র COVID হাসপাতালটি রয়েছে বর্ধমান শহরের অদূরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বামচাঁদাইপুরে। বেসরকারি একটি হাসপাতালে বর্তমানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। জেলাশাসক জানান, সেখানে মোট শয্যা সংখ্যা ১২৮টি। জেলায় রবিবার রাত পর্যন্ত জেলায় অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১২৭। সোমবার রাতে তা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। পাশাপাশি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রি-COVID ও SAARI ইউনিটও প্রায় ভরতি হয়ে গিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হচ্ছে, আক্রান্তদের অনেকেই অ্যাসিম্পটমিক বা মাইল্ড সিম্পটমিক রয়েছেন। ফলে তাঁদের সেফ হোম বা হোম আইসোলেশনে রেখেও চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বিকল্প ব্যবস্থা করে রাখার পথেই হাঁটছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তর।