“আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ লঙ্কা করিয়া জয়

সিংহল নামে রেখে গেছে নিজ শৌর্যের পরিচয়।”

ষষ্ঠ, সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যক্রমের পদ্যাংশে ছন্দের যাদুকরের এই পংক্তি দুইটি কিশোর মানসে বিজয় সিংহ সম্পর্কে এক স্বাভাবিক কৌতুহলের সঞ্চার করে। কিন্তু এই বিষয়ে ইতিহাসের সমগ্র পাঠ্যক্রমে অপ্রাকৃত নৈঃশব্দ্য ছাত্রমনের সেই কৌতুহলকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেয়। কিশোন মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হয় যে, বাঙ্গালী হিন্দুরা এক অসামরিক জাতি। বীরত্বে বা সামরিক দক্ষতায় তার যোগ্যতা কোনদিনই ছিল না। ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে স্থান না পাওয়া বাঙ্গালীর গৌরবোজ্জ্বল অতীতের এক স্বর্ণিম অধ্যায়ে সিংহাবলোকনের ক্ষুদ্র প্রয়াস এই প্রবন্ধ।

কাহিনীর শুরু আজ থেকে ২৫০০ বছর আগেরাঢ় বঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের (অধুনা বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুরের একাংশ থেকে ভাগীরথীর পশ্চিম তীরবর্তী বর্ধমান ও হুগলী জেলা) রাজা ছিলেন সিংহবাহু। প্রবল পরাক্রমী ও প্রজাবৎসল এই রাজার উপাধি ছিল সিংহল। এঁর কীর্তিতেই বাংলার এক প্রাচীন জনপদ পরিচিত হয় সিংহপুর নামে। অধুনা হুগলী জেলার ‘সিঙ্গুর’ এই সিংহপুর শব্দেরই অপভ্রষ্ট রূপ। যদিও বর্তমান সময়ে এই স্থান জনমানসে পরিচিতি লাভ করেছে সম্পূর্ণ এক অন্য কারণে। সিংহবাহুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বিজয় সিংহ সিংহের মতই দুর্নিবার। রাজার কাছে অভিযোগ আসে রাজকুমার বিজয় প্রজাদের প্রতি সহানুভূতিশীল নন। ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে রাজার কাছে তাঁর প্রজারা সন্তানসম। যুবরাজের এরূপ অসদাচরণ সিংহবাহুর কাছ অমার্জনীয়। ফলে প্রাণাধিক প্রিয় পুত্রকে কঠিন শাস্তি দিতে দ্বিধা করেননি। তিনি। দণ্ড নির্ধারিত হয়, যুবরাজ বিজয় সিংহ রাজত্ব থেকে নির্বাসিত হলেন। যুবরাজ নত মস্তকে স্বীকার করলেন দণ্ড। অনুগত সাতশ সহচর নিয়ে সমুদ্রের অসীম জলরাশিতে ভাসল তার অর্ণবপোত, যাত্রা করলেন নিরুদ্দেশের পথে।

হিন্দুদের কাছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) এক অতি পরিচিত স্থান। রামায়ণের বর্ণনায়, রাক্ষসরাজ রাবণকে হত্যা করে, তার রাজ্য স্বর্ণময়ী লঙ্কায় রামচন্দ্র কীভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেন তা হিন্দুমাত্রেই অবহিত। কিন্তু রামচন্দ্রের প্রত্যাবর্তনের পর জম্বুদ্বীপের (ভারতবর্ষের প্রাচীন নামগুলির মধ্যে একটি) মূল ভূখণ্ড থেকে শ্রীলঙ্কার দ্বীপে যাওয়ার কোন দৃষ্টান্ত নেই।

২২২২ কি.মি. (১২০০ নটিক্যাল মাইল– দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্রোপকুল থেকে শ্রীলঙ্কার প্রকৃত দূরত্ব) তরঙ্গ সঙ্কুল জলপথ পাড়ি দিয়ে, ভারত মহাসাগরের উত্তাল ও দুর্লঙ্ঘ্য তরঙ্গের সুরক্ষা বলয় ভেদ করে, বিজয় সিংহের জলযান স্পর্শ করল দারুচিনির গন্ধ মাখা শ্রীলঙ্কার শ্যামল ভূমিকে। নির্বাসিত যুবরাজ এখানেই বসবাস শুরু করলেন। সহচরদের বিবাহ দিলেন স্থানীয় অধিবাসিনীদের সঙ্গে। নিজেও পাণিগ্রহণ করলেন স্থানীয় এক যুবতীর। বেশ চলছিল। কিন্তু সেখানকার রাজার অপশাসন আর অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে লাগলেন বিজয় সিংহ। বিরোধ বাধল রাজার সঙ্গে। বাংলা থেকে আসা তাঁর সঙ্গী এবং তাদের সঙ্গে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ স্থানীয় অধিবাসীদের সংগঠিত করে রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন তিনি। শুরু হল অসম সংগ্রাম। একদিকে শস্ত্র-সম্পদে সমৃদ্ধ রাজসেনা, অন্যদিকে বিজয় সিংহের নেতৃত্বে সীমিত সম্পদ অথচ অদম্য মনোবলে বলীয়ান এক ক্ষুদ্র বাহিনী। তীব্র রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জয়ী হয়ে অবশেষে বিজয়লক্ষ্মীর কৃপা লাভ করলেন বিজয় সিংহ (Vijay Singho)। বীরভোগ্যা বসুন্ধরা করায়ত্ত হল তাঁর। বাংলার প্রাচীন বন্দর তাম্রলিপ্ত (অধুনা তমলুক) থেকে অজানার পথে শুরু হওয়া অভিযান পরিণতি পেল শ্রীলঙ্কার তাম্রপর্ণীতে। প্রতিষ্ঠা হল নতুন রাজ্য। বিজয় সিংহ পিতার স্মৃতিতে সেই দেশের নাম রাখলেন ‘সিংহল’। শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাঙ্গালীর বিজয় পতাকা উড়ল।

বহু যুগ আগে পিতৃসত্য পালনে বনবাসে নির্বাসিত এক যুবরাজ সানুচর পদার্পণ করেছিলেন শ্রীলঙ্কাতে, নিজের অপহৃত স্ত্রীকে উদ্ধারের উদ্দেশ্য নিয়ে। সীমিত সামর্থ্যের বানর বাহিনী নিয়ে অসম যুদ্ধে পরাস্ত করেছিলেন প্রভূত সম্পদশালী রাক্ষসরাজকে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রজাকল্যাণকামী ধর্মরাজ্যের। ভগবান রামচন্দ্র অমর হয়ে আছেন ভারতাত্মার ইতিহাস রামায়ণের মধ্যে। History Repeats Itself এই প্রবাদকে সত্য প্রমাণ করে তার অনেক বছর পরে পিতৃ-আজ্ঞায় নির্বাসিত যুবরাজ বিজয় সিংহও শ্রীলঙ্কায় এলেন অনুচর সঙ্গে। অসম যুদ্ধে জয়ী হলেন পরাজিত করলেন অত্যাচারী রাজাকে। পিতার যোগ্য উত্তরাধিকারে সন্তানসম বাৎসল্যে প্রজাপালন করলেন। নিজ গুণে হয়ে উঠলেন জননায়ক।

দুঃসাহসিক অভিযাত্রী, অদম্য মনোবল ও অসামান্য নেতৃত্বগুণের অধিকারী, দক্ষ সংগঠক, অকুতোভয় সমরনায়ক, সংবেদনশীল নিপুণ প্রশাসক তথা সর্বোপরি লোককল্যাণকারী প্রজাবৎসল রাজা হিসাবে বিজয় সিংহকে সিংহলবাসিগণ সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন। শ্রীলঙ্কার সর্বাধিক প্রাচীন তথা প্রসিদ্ধ গ্রন্থদ্বয় মহাবংশ ও দ্বীপবংশ-এর লিপিতে অমর হয়ে আছে বিজয় সিংহের বীরগাথা। বাংলা থেকে তাঁর অনুচরদের মাধ্যমে যে জনগোষ্ঠী বিস্তার লাভ করল, তারা সিংহলী নামে পরিচিত হলেন। আজও শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ সিংহলী জনগোষ্ঠীর। নিজেদের মূলকে স্মরণ করে আজও সিংহলীদের একটি বড় অংশ সিংহ পদবী ব্যবহার করেন, যা স্থানীয় ভাষায় ‘সিংঘে’ উচ্চারিত হয় (উদাহরণ : বিক্রমসিংঘে, গুরুসিংঘে ইত্যাদি)। সিংহলী সংস্কৃতি, কৃষ্টি, জীবনচর্যা অচ্ছেদ্য বন্ধনে ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে জুড়ে আছে।

শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) সমগ্র ভূখণ্ডে পশুরাজ সিংহের অস্তিত্ব কোনকালেই ছিল না। অথচ, বাঙ্গালী জাতি সুপ্রাচীন কাল থেকে শক্তির আরাধনা করে আসছে সিংহবাহিনী রূপে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে বিষ্ণুর অবতার নরসিংহদেবও পূজিত হন সমগ্র ভারত জুড়ে। তাই সিংহবাহুর পুত্র বিজয় সিংহের প্রতিষ্ঠিত রাজ্যে সিংহের প্রতীক সর্বত্র বিদ্যমান। শ্রীলঙ্কার জাতীয় পতাকা থেকে সামরিক বাহিনীর প্রতীক সর্বত্র বিরাজমান অসুরদলনীর বাহন পশুরাজ।

বিজয় সিংহের (Vijay Singho) গৌরব গাথা শ্রীলঙ্কাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ভারতের মূল ভূখণ্ডেও তিনি এক বন্দিত পুরুষ। গুহাচিত্রের জন্য  বিশ্ববিখ্যাত অজন্তায় ১৭ নম্বর গুহায় ‘সিংহল অবদান’ নামক গুহাচিত্রগুলিতে বিজয় সিংহের কীর্তিকাহিনী বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত আছে। চীনের পরিব্রাজক হিউ-য়েন-সাঙ তাঁর ভারত ভ্রমণের বিবরণে স্মরণ করেছেন জনপ্রিয় নরপতি বিজয় সিংহকে।

বঙ্গসন্তান বিজয় সিংহের কীর্তিকে যেসব যুক্তিবাদীরা কবির কল্পনা বলে উপেক্ষা ও হেয় করে আসছিলেন, বিগত কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক গবেষণা তাদেরকেও স্তব্ধ করে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার অধিবাসী সিংহলী জাতির জিনের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের মাধ্যমে একাধিক আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক তাদের পৃথক ও স্বাধীন গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে, তাদের জিন বাঙ্গালী জাতির জিনের সঙ্গে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।

বিজয় সিংহের রাজত্বকাল ৫৪৩ খৃষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৫০৫ খৃষ্টপূর্বাব্দ। অর্থাৎ তিনি ভগবান বুদ্ধের সমসাময়িক। ইউরোপ তখন জঙ্গলাকীর্ণ। সেখানকার অধিবাসীরা তখনও সভ্যতার আলো দেখেনি সমুদ্রযাত্রা তো দূরের কথা! বিজয় সিংহের (Vijay Sinha) সিংহাসনারোহণের আরও প্রায় ১০০ বছর পরে ম্যাসিডোনিয়াতে জন্ম হবে আলেক্সাণ্ডারের, ৪০০ বছর পরে উত্থান হবে রোমান সাম্রাজ্যের, ২০০০ বছর পরে খৃষ্টীয় ধর্মযাজক ও রাজানুগ্রহে তথা রাজকোষের অর্থানুকূল্য ভাস্কো ডা গামার সমুদ্র তরণী ভারতে এসে ঠেকবে। প্রগতিশীল, সাম্যবাদী, উদারপন্থী বুদ্ধিজীবী বাঙ্গালী তার ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে ‘মহান’ আলেক্সাণ্ডারের বীরত্ব, রোম সাম্রাজ্যের উন্নতি বা ‘দুঃসাহসী’ নাবিকের ভারত আগমনের বিস্তারিত বিবরণে পাতার পর পাতা, অধ্যায়ের পর অধ্যায় ভরিয়ে তোলে। অথচ তার ভূমিপুত্র বিজয় সিংহ থেকে যায় বিস্মৃতির অতলে। কৃষি বনাম শিল্প এই রাজনৈতিক বিরোধের সূতিকাগৃহ রূপে বাংলার ইতিহাসে ঢুকে পড়ে সিঙ্গুর। অনুচ্চারিত থেকে যায় তার গৌরবোজ্জ্বল অতীত, যা খ্যাত ছিল সিংহপুর নামে।

বিজয় সিংহের অভিযানের প্রায় ২৪০০ বছর পর আরেক বীর বঙ্গ সন্তান সমুদ্রপথে যাত্রা করবেন পাশ্চাত্যের উদ্দেশে। গুরুর আদেশে, সহায় সম্বলহীন এক যুবক সন্ন্যাসী সমুদ্র পার করে পৌঁছবেন শিকাগোতে। ইউরোপ-আমেরিকার পাশ্চাত্য সমাজ তাঁর কাছ থেকে মুগ্ধ হয়ে শুনবে হিন্দু ধর্ম-সংস্কৃতি-বেদান্তের কথা। বিশ্বজুড়ে হিন্দুত্বের জয়ধ্বজা উড়িয়ে ‘Hindoo Monk of Indiaস্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বেছে নেবেন বিজয় সিংহের লীলাভূমি শ্রীলঙ্কাকেই। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারি স্বামীজী পদার্পণ করলেন কলম্বোতে। স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরে বিশ্ববিজয়ী এই হিন্দু সন্ন্যাসীকে তাঁর মাতৃভূমিতে স্বাগত জানানোর প্রথম অভ্যর্থনা জানানোর সুযোগ যেন বিধাতা সযত্নে তুলে রেখেছিলেন সিংহলবাসী হিন্দু সমাজের জন্য। তাদের উচ্ছ্বসিত অভ্যর্থনায় অভিনন্দিত হলেন স্বামীজী। আত্মবিস্মৃত নিদ্রিত জাতিকে জাগিয়ে তুলতে ভারতবাসীর প্রতি তাঁর তেজোদীপ্ত ভাষণ শৃঙ্খলার সূচনা করলেন এই কলম্বো থেকেই, যার সমাপ্তি ঘটবে হিমালয়ের কোলে আলমোড়াতে।

২৫০০ বছর আগে রাঢ়বঙ্গের পুণ্যভূমি থেকে বিজয় সিংহের (Vijay Singho) সঙ্গে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তাম্রপর্ণীর পথ ঘুরে, বিধাতা নির্দিষ্ট এক মধুর সমাপতনে সেই বৃত্ত সম্পূর্ণ হল রাঢ়বঙ্গের তাম্রাভ ভূমিতেই। ১৯৪০ খৃষ্টাব্দে শান্তিনিকেতনের গুরুগৃহে, কবিগুরুর অনুপ্রেরণায় সিংহলদেশীয় আশ্রমিক আনন্দ সমরুকুনের কলমে রচিত হল সিংহলের জাতীয় সঙ্গীত ‘… নমো নমো নমো মাতা…’

বিশ্বনাগরিক ও বুদ্ধিজীবী বাঙ্গালী, সেকুলার ও সমাজবাদী বাঙ্গালী, অন্যায়ের প্রতিবাদে গর্জে ওঠা বাঙ্গালী সোচ্চার হয় চীন, রাশিয়া, ভিয়েতনাম কিংবা কিউবার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনে। প্রতিবাদের আগুন বাঙ্ময় হয়ে গলা থেকে ঠিকরে বেরোয় ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়ার শ্রমিক, রোহিঙ্গ্যা উদ্বাস্তু আর নাগরিকত্বের প্রমাণবিহীন অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে। বাংলার কোণায় কোণায় শোভা পায় মার্ক্স, লেনিন, মাও বা হো চি মিনের সুউচ্চ মূর্তিবাংলার রাজধানী সহ সমস্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাজপথ তাদের নামে নামাঙ্কিত হয়। পথ, উদ্যান বা কলোনির নামকরণের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে থাকেনা মহম্মদ আলি, প্রিন্স আনোয়ার শাহ, টিপু সুলতান, তিতুমীর, সোহরাবর্দীরাও। বাঙ্গালীর বিদ্যাশিক্ষার পীঠস্থানে চে গুয়েভারার মূর্তি বসানোর দাবিতে ‘হোক কলরব’ পর্যবসিত হয় গগন বিদারী রণ হুঙ্কারে। ভারতীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থানে জঙ্গী হামলার চক্রান্তকারী আফজলকে শহীদের মর্যাদা দিয়ে তার ফাঁসির দিনে শহীদ দিবস উদযাপিত হয়। বাংলার হতভাগ্য নির্বাসিত যুবরাজ বিজয় সিংহ কিন্তু নির্বাসিতই থেকে যান বাঙ্গালী মানসে। দুর্ভাগ্য তাঁর তিনি এই দেশে জন্মেছিলেন। তাই তাঁর মূর্তি তো দূর, বাংলার ক্ষুদ্রতম জনপদের অতি অবহেলিত পথটিও তাঁর নামের সাক্ষ্য বহন করে না

বঙ্গবীর বিজয় সিংহের (Vijay Singho) অক্ষয় কীর্তি মানবেতিহাসের কৃষ্ণপটে শ্বেতশুভ্র অক্ষরে জাজ্বল্যমান হয়ে রয়েছে। তাঁকে বিস্মরণের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালীজাতিই আত্মবিস্মৃতির কৃষ্ণ গহ্বরে গভীর থেকে গভীরে নিমজ্জিত হয়ে চলেছে। তাই আসুন, এই বীর বঙ্গতনয়কে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করি। তাঁর সিংহ বিক্রম বাঙ্গালী জাতির মধ্যে সঞ্চারিত হোক এই প্রার্থনে করি। আর জনগণের নির্বাচিত সরকার দ্বারা তাঁর প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শনের দাবিতে সোচ্চার হই।

তথ্যসূত্র:

  1. Behl, Benoy Krishna; Ajanta Caves : Artistic Wonder of Ancient Buddhist India; Harry N Abrams, New York, 1998
  2. Dīpavaṃsa, The; Oldenberg, Herman (ed. & tr.); Williams and Norgate, London, 1879
  3. Dharmadasa, K N O & Vaiamon, Sripali; Pre-historic Lanka to End of Terrorism; Trafford Publishing, Bloomington, 2012
  4. Genomic Diversity : Applications in Human Population Genetics; Papiha S.S et. al. (ed.); Springer, New York, 1999.
  5. Kirk, R.L; Legend of Prince Vijaya, The; American Journal of Physical Anthropology, Vol 45, Issue 1; 1976 (retrieved from “https://doi.org/10.1002/ajpa.1330450112”)
  6. Kshatriya, Gautam Kumar; Genetic Affinities of Sri Lankan Populations; Human Biology, Vol 67, Issue 6; 1995, Wayne State University Press, US.
  7. Mahāvaṃsa,The; Geiger, Wilhelm (tr.); Pali Text Society, London, 1912
  8. Sanyal, Sanjib; Ocean of Churn, The : How the Indian Ocean Shaped the Human History; Penguin, UK, 2016
  9. Spencer, Jonathan; Sri Lanka : History & Roots of Conflict; Routledge, London, 1990

রজত কুমার দাশ (Rajat Kumar Das)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.