করোনাভাইরাসের (Coronavirus) সংক্রমণের জন্য গোটা ভারত যখন অবরুদ্ধ, বাধ্যতামূলক অন্দর-বাস করতে হচ্ছে মানুষকে, তখন গরিব, কৃষক ও সমাজের দুর্বল অংশের জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। যে ঘোষণার অন্যতম বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ প্রকল্পের আওতায় অবিলম্বে গোটা দেশের কৃষক-চাষিদের অ্যাকাউন্টে ২০০০ টাকা করে সরাসরি ট্রান্সফার করবে সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitaraman) জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসের গোড়াতেই ওই টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, বাংলার কৃষকরা কি ওই সুবিধা পাবেন? নাকি তা থেকে এবারও বঞ্চিত হবেন! কারণ, লোকসভা ভোটের আগে গত বছর যখন প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা শুরু হয়, তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার জানিয়ে দিয়েছিল বাংলায় তারা ওই প্রকল্প বলবৎ করবে না। কারণ, বাংলায় তাদের নিজস্ব প্রকল্প রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান যোজনার আওতায় প্রতিটি কৃষক কেন্দ্রের থেকে বছরে ৬ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। স্বাভাবিক ভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের এ ব্যাপারে তালমিল না থাকায় বাংলার ক়ৃষকরা তা পান না। পশ্চিমবঙ্গে এসে এ ব্যাপারে বার বার রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান যোজনা ছাড়াও আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পও বাংলায় বাস্তবায়িত হয়নি। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় গরিব পরিবারগুলিকে বছরে ৫ লক্ষ টাকার ক্যাশ লেস স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা দেয় কেন্দ্রের সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারেও বাংলার সরকারের বক্তব্য, এ রাজ্যে একই ধরনের প্রকল্প রয়েছে। কেন্দ্র তা থেকে ‘টুকলি’ করেছে।
যদিও বিজেপি (BJP) নেতৃত্বের বক্তব্য, বাংলার কৃষককে যে ক্যাশ ট্রান্সফার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকার তা কেন্দ্রের তুলনায় অনেক কম টাকা। যাঁদের এক একরের কম জমি রয়েছে তারা নামমাত্র টাকা পান। আর স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা সব গরিবরা বাংলায় পায় না। মানুষকে বিভ্রান্ত করে মিথ্যা প্রচার করে বাংলার শাসক দল। রাজ্যসভায় বিজেপি (BJP) সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত (Swapan Dasgupta) বলেন, এখন মানুষের মরণ বাঁচন লড়াই চলছে। বাংলায় তৃণমূল সরকারের উচিত রাজনীতি না করে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করা।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের মতোই দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Aurobindo Kejriwal) সরকারও আগে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাস্তবায়িত করেনি। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর কেজরিওয়াল সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা এ বার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প দিল্লিতে (Delhi) বাস্তবায়িত করবে।