জনতার দাবির মর্যাদা, কংগ্রেসের জ্যোতিষ্ক পতন

মস্তিষ্কে মরুভূমি না থাকলে কংগ্রেসের জ্যোতিষ্ক পতনের পূর্বাভাস সেদিনই ছিল যেদিন সাংবাদিক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার জনতার দাবির মর্যাদা রাখতে রাস্তায় নেমে লড়াই করার খবর দেন।কমল নাথ সঞ্জয় গান্ধী ঘরানার স্বৈরতন্ত্রী প্রজাতির রাজনীতিক। ক্ষমতা হাতে পেলে ধরাকে সরা জ্ঞান করাই তাঁর স্বভাব। তিনি ল্যাম্পপোস্ট থেকে বিদ্যুতের খাম্বা সব রকম কারবার করেই পয়সা করেছেন, আমাদের দেশে পূর্বতন রাজা-রাজড়াদের মর্জি বুঝতে খামতি থেকে গেছে। এবার সেটা দামি হয়ে গেল।তিনি সাংবাদিককে তাচ্ছিল্য করে সিন্ধিয়াকে রাস্তায় নামারই উপদেশ দেন। ২০১৮-তে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ক্ষমতায় ফেরায় সিন্ধিয়ার বড় অবদান ছিল। ক্ষমতা পেতেই দলের সোনিয়াপন্থী বুড়ো মহল সিন্ধিয়াকে একঘরে করে দেয়। গণতান্ত্রিক দেশ হলেও রাজরক্তের গরিমা অবসিত হওয়ার এখনো দেরি বলেই অনুমান।সিন্ধিয়া কংগ্রেস তো ছেড়েছেনই, ফালা ফালা করে দিয়েছেন কমলবাবুকে। তাঁর অনুগামী বাইশ বিধায়ক তাঁর সঙ্গে বেরিয়েছেন। সম্ভবত কমল নাথেরই রাস্তায় বসার পথ তৈরি। সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বখাটে,বুদ্ধু খোকার এত কাছের লোকের জন্যও খোকা আবার তার রাজনৈতিক বুদ্ধির পঙ্গুত্ব প্রমান করে নিকম্মাই হয়ে রইলো। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস বুড়োদের উৎপাতে গোল্লায় যাওয়ার পথে। কিন্তু সিন্ধিয়ার কাছে বিকল্প ছিল না।তিনি বড়দার মতো নির্বোধ নন।

বখাটে বড়দার বদখেয়ালে কংগ্রেস আজ সন্ত্রস্ত ,ভঙ্গুর। দল ছাড়লেন পোড়খাওয়া নেতা জ্যোতিরাদিত্য। দলের মেজদা, রাঙাদা, ফুলদারাও বড়দার বদখেয়ালে অতিষ্ঠ। সদ্য দিল্লির দাঙ্গার সময় বিদেশে ছুটি কাটিয়ে ফিরে মুসলিম মহল্লায় ভোট গোছাতে গিয়ে খিস্তি খেয়ে ফিরেছেন।লোকে এখন তার মুখের অন্তর্নিহিত বদমাইশি ধরে ফেলেছে। এই পারিবারিক রাজনীতি ব্যবসায়ী পরিবারের পার্টটাইম বেলাল্লা বাবুর অধস্তন হয়ে থাকলে যে ভবিষৎ অন্ধকার এটা যথার্থ রাজনীতিকরা টের পাচ্ছেন। ওদিকে অসাড় খোকা বেরোচ্ছে। মা বলেন কোথা যাস বাছা। একটু মাদ্রাসা স্কুল গুলো ঘুরে মোদির জন্যে খিস্তিটা একটু ঝালিয়ে নোব। অনেক কাজ মা জিমে যেতে হবে। ছ মাস সময়ের এক মাসতো কেটে গেল, মোদিকে পেটানোর কথা দিয়েছি খেয়াল নেই। সে বোকাও আবার সূর্য নমস্কার করে পিঠ শক্ত করছে। মা বললেন ওরে ওদের তো অনেক কিছু শক্ত পোক্ত করতে হয়।তবে তো পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে পারবে। তোর তো জম্ম থেকেই সব মোটা নিরেট বাবা।হায়, এটা বুঝতে বুঝতেই তোর মা থেকে কখন যে ভুবনের মাসি হয়ে গেলুম। ওদিকে তোর বোনটা আবার ষণ্ড স্বামীর কালাধান্দা দলের আঁচল ধরে চালাতে চায়।বোঝে না দিন কাল কত পাল্টে গেছে তোদের তো এয়ারপোর্টে এখন নরমাল চেকিঙ হয়। বল দিকিনি যা কিছু ব্যাগে গুঁজে সটকে পড়ার সে সব সোনালী দিন কি আর আছে। ইতালিতে কাকার অ্যান্টিক চালানের তো আদি ব্যবসা ছিল। যাকগে চামচা গুলোকে জড়ো করে বল মোদি, অমিত শা টাকা দিয়ে দল ভাঙিয়ে গণতন্ত্রের সর্বনাশ করছে। আর জনতার ভোটে নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে না দিয়ে পারলামেন্টে চরম বেলাল্লাপনা কর। এ ছাড়া কোনো পথ নেই, রাজস্থানও গেল বলে। কত ভালো ছেলে সচিন পাইলট পাছে তোকে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায় তাই চেপে দিয়েছিলুম। যাই হোক এ যা হচ্ছে তুই এত চাপ নিতে পারবি না।বরঞ্চ দিদিমার বাড়ি চলে যা। তোর তো আবার চাপ কাটাতে কি সব যেন লাগে।তুই ঘুরে আয়। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলার বোধ হয় আবার দিন এগিয়ে আসছে তখন হয়তো বিপদ বাড়বে। সাধ না মিটিল আশা না পুরিল। এই মোদীটা সব শেষ করে দিলো। দিল্লি ভোটে মাইনোরিটি খেপাতে আরপার কি লড়াইয়ের ডাক দিয়ে দাঙ্গা বাঁধাতে চাইলুম। হলোও তাই। সবাই তোর দৌড় বুঝে গেছে, সব জামানত জব্দ হয়ে গেল। নাঃ আর কিছু হবে না। তুইও গেলি ,দলও গেল। আমি আর ক দিন।পাপের সাজা হবেই। দেশটা তো বাঁচবে।

না না দেশ বাঁচানোর ভাবনাটা বড়দার পুত্রমোহে অন্ধ ভুবনের মাসির অবশ্যই নয়।তবে ফোকটে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লালসা তাঁর নিশ্চয়ই ছিল। এক ভোটে বাজপেয়ীর সরকার ফেলিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ২৭২ জন সংসদের সমর্থন থাকার দাবী করেছিলেন। সেদিন কিন্তু ভারতবাসীকে নিজজাতির প্রধানমন্ত্রী না থাকার মহালজ্জা থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন ধুতি পরা মুলায়ম সিং যাদব। রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে বলেছিলেন হাম ইনকে (সোনিয়ার) খিলাফ হ্যায়। দেশ তাঁর কাছে চিরঋণী। ইনি এখনো রোমান হরফে লেখা হিন্দি পড়ে যান। নিজে কিছু বলতে পারেন না। কোনোদিন ভারতীয় ভাষা শেখার প্রয়োজন মনে করেননি।পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটলে দেখা যাবে শাশুড়ি জরুরি অবস্থা জারি করলে এ দেশ ছেড়ে স্বামীকে নিয়ে পালাতে চেয়েছিলেন।তাই তাঁর পরিবারের প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির দুষ্কর্মের পরিচালকগিরি লাটে উঠলে হৃতগৌরব কংগ্রেসের কোনো আশা থাকলেও থাকতে পারে। তবে দেশের যে মঙ্গল এতে কোনো সন্দেহ নেই।মা খ্রিস্টান, দাদু পার্সি, নাতি পৈতেধারী বামুন নিদেনপক্ষে এই মিথ্যাচারগুলোর তো অন্ত হবে। সিন্ধিয়ার দলবদল বস্তুতঃ তাঁর বাপ দাদার বাড়িতে ফিরে আসার পরিণতি তাই এর অভিঘাত সুদূরপ্রসারী।

সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.