অমরনাথ

আসিবার পথে স্বামীজী তীর্থযাত্রার প্রত্যেকটি বিধি-নিয়ম পালন করিয়ছেন। মালা-জপ, উপবাস এবং যাত্রার দ্বিতীয় দিনে কঙ্করময় নদী গর্ভগুলি অতিক্রমকালে পরপর পাঁচটি স্রোতস্বিনীর(পঞ্চতরণী) বরফ-গলা জলে স্নান-সবই তিনি যথাবিধি করিয়াছেন। এইবার যখন তিনি গুহা মধ্যে প্রবেশ করিলেন, বোধ হইল, মহাদেব যেন সশরীরে তাঁহার নিকট প্রত্যক্ষ হইলেন। কোলাহল করিয়া অসংখ্য যাত্রী গুহায় প্রবেশ করিতেছে, মাথার উপর পারাবতকুল ঝটপট শব্দ করিয়া উড়িতেছে; তাহারই মধ্যে স্বামীজী অপরের অলক্ষ্যে দুই-তিন বার ভুমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন; তারপর পাছে ভাবাবেশে আত্মহারা হইয়া পড়েন, এই ভয়ে নিঃশব্দে উঠিয়া দাঁড়াইলেন ও দ্রুতপদে বাহিরে চলিয়া গেলেন । পরে বলিয়াছিলেন, ঐ সংক্ষিপ্ত কয়েক মুহুর্তে তিনি মহাদেবের নিকট ইচ্ছামৃত্যু বর লাভ করেন। আশৈশব যে অস্ফুট ধারণা তাঁহার মনে দৃঢ়বদ্ধ ছিল যে, পর্বতের মধ্যে কোন শিব-মন্দিরে তাঁহার মৃত্যু ঘটিবে, সম্ভবতঃ এইরূপে তাহা ব্যর্থ হয়, অথবা সার্থকতা।

ভগিনী নিবেদিতা

(স্বামীজিকে যেরূপ দেখিয়াছি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.