ম্যাচ শুরু হওয়ার অন্তত তিন দিন আগে থেকেই জল্পনা চলছিল ইডেন গার্ডেন্সের পিচ নিয়ে। কেমন হবে পিচ তা নিয়ে দুই দলের কেউই কোনও ধারণা দিতে পারেননি। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে কার্যত খলনায়কের ভূমিকা নিয়েছে পিচ। প্রথম দু’দিনে পড়েছে ২৬টি উইকেট। ভারতের বোলিং মর্নি মর্কেল স্বীকার করে নিলেন, ইডেনের পিচ খারাপ। পাশাপাশি শুভমন গিল কী ভাবে ঘাড়ে চোট পেলেন সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মর্কেল বলেন, “সত্যি বলতে, এত তাড়াতাড়ি পিচ খারাপ হয়ে যাবে সেটা আমরা ভাবতে পারিনি। ম্যাচের আগের দিন, এমনকি ম্যাচের সকালেও আমরা ভেবেছিলাম পিচ ভাল। এমনকি প্রথম দু’ঘণ্টাতেও খারাপ কিছু মনে হয়নি। তাই পিচ দ্রুত খারাপ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত। তবে উপমহাদেশে খেলার এটাই মজা। আপনাকে সব সময় মানিয়ে নিতে হবে এবং পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। আমাদেরও সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা নিজেদের শক্তি অনুযায়ীই পিচ বানাতে চাই।”
এই পিচে ব্যাটিং করার দক্ষতা পুরোটাই ব্যাটারের উপর নির্ভর করে বলে জানিয়েছেন মর্কেল। তাঁর মতে, আলাদা কোনও কৌশল হয় না। মর্কেল বলেছেন, “ব্যাটিং নির্ভর করবে ব্যাটারের উপরেই। কী ভাবে খেলতে চাইছে সেটা তার ব্যাপার। আমার মনে হয় না এর আলাদা কোনও কৌশল হয়। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে বোলারকে চাপে ফেলার। খুচরো রান নিতে হবে, ক্রিজ়ে ব্যস্ত থাকতে হবে। যে ব্যাট করছে সে কী ভাবে খেলবে এবং রান করবে সেটা নিজেকেই বুঝে নিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে জুটি গড়া। কারণ নতুন ব্যাটারের পক্ষে শুরুটা একটু কঠিন হবে।”
এ দিন ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ায় ব্যাট করতে পারেননি শুভমন। তাঁকে স্ট্রেচারে করে স্টেডিয়াম থেকে বার করা হয়েছে। মর্কেলের মতে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। শোয়ার দোষেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। মর্কেলের কথায়, “কী করে ওর ঘাড় শক্ত হয়ে গেল সেটা আগে আমাদের বুঝতে হবে। হয়তো শোয়ার দোষে হয়েছে। শারীরিক ধকলের মতো ব্যাপার নেই। শুভমন ফিট। নিজের খেয়াল ভালই রাখে। আজ সকালে দুর্ভাগ্যবশত ঘাড় শক্ত অবস্থাতেই ঘুম থেকে উঠেছে। সারা দিন ধরেই সেটা ছিল।”
ইডেন টেস্টে চার স্পিনারে খেলেছে ভারত। আগামী দিনে এটাই কি তাদের অস্ত্র হতে চলেছে? মর্কেলের উত্তর, “ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। সেরা একাদশ বেছে নিতে চাই যারা ভারতকে জেতাতে পারে। আমরা দূরের দিকে তাকাতে চাইছি না। আপাতত এই ম্যাচের দিকেই যাবতীয় মনোযোগ রয়েছে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে গুয়াহাটিতে যাব এবং সেখানকার পিচ দেখে বাকি সিদ্ধান্ত নেব।”
দক্ষিণ আফ্রিকার সাইমন হারমার জানিয়েছেন, এর থেকেও খারাপ পিচ দেখেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “উইকেটে বল ঠিকঠাক ভাবে ঘুরছে না। তাই নিজেকে ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করছি। যদিও পিচ ইতিবাচক থাকার সুযোগ খুবই কম। যত দূর মনে পড়ছে, ২০১৫-র পিচ এর থেকেও খারাপ ছিল।”
পিচ নিয়ে খুব একটা আশার কথা শোনালেন না অক্ষর পটেলও। তিনি বলেছেন, “এক প্রান্ত থেকে মনে হচ্ছে বল সোজা যাচ্ছে। অপর প্রান্ত থেকে যে কোনও কিছু হতে পারে। পিচে বোলারদের জন্য সাহায্য থাকলে অনেকেই ভাবে যে একটা জাদু বলেই বাজিমাত করে দেবে। সেটা সব সময় সম্ভব নয়। আমরা যদি ওদের ১২৫-এর মধ্যে আটকে রাখতে পারি তা হলে রান তাড়া করে ফেলতে পারব।”

