দুর্গাপুরকাণ্ডে নির্যাতিতার বাবাকে নিয়ে ‘টানাটানি’! বিজেপির সঙ্গে বচসা ‘অভয়া মঞ্চ’ ও চিকিৎসক সংগঠনের

দুর্গাপুরে ‘ধর্ষণকাণ্ডে’ নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন ‘অভয়া মঞ্চ’ এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্‌স ফোরামে’র সদস্যেরা। আঙুল উঁচিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তা নিয়ে ইতিমধ্যে দু’পক্ষেরই সমালোচনা শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

আরজি কর আন্দোলনের সময়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্‌স ফোরাম’ এবং ‘অভয়া মঞ্চ’কে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। রবিবার দুর্গাপুরকাণ্ডে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁরা আরজি কর আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরছিলেন নির্যাতিতার বাবার কাছে। তাঁরা নির্যাতিতার বাবাকে জানান, গত দেড় বছর ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের বিরুদ্ধেও তাঁরা আন্দোলন চালাচ্ছেন। নিজেদের আন্দোলনের কথা জানিয়ে, নির্যাতিতার বাবার ফোন নম্বর চান তাঁরা।

এই কথাবার্তা চলার মাঝেই পাশ থেকে এক ব্যক্তি নির্যাতিতার বাবার কানে কানে কিছু বলে দেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেও ওই ব্যক্তি এবং আরও কয়েক জন মিলে নির্যাতিতার বাবাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দাবি করা হচ্ছে, তাঁরা সকলেই বিজেপি কর্মী। নির্যাতিতার বাবাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এক জনকে বলতে শোনা যায়, “আপনারা কত ‘জাস্টিস’ দেবেন, আমরা জানি।” তাতেই পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে ওঠে। অভয়া মঞ্চ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্‌স ফোরামের সদস্যেরা তাঁদের দিকে ছুটে যান। তাঁদের থামিয়ে জানতে চান, কেন ওই মন্তব্য করা হল। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। এক পক্ষ প্রশ্ন তুলতে থাকে, ‘সিবিআই কী করেছে’? অপর পক্ষের পাল্টা প্রশ্ন, ‘আপনারা কী করেছেন!’

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে দু’পক্ষই একে অন্যের দিকে আঙুল উঁচিয়ে উঁচু স্বরে তর্কাতর্কি শুরু করে দেন। যদিও পরে নির্যাতিতার বাবাকে বিজেপি কর্মীরা সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। রবিবারের এই ঘটনার ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। পোস্টটির সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরাধরি। এরা কি আদৌ অপরাধীদের বিচার চায়? শাস্তি চায়? নাকি সংকীর্ণ রাজনীতি করে দুর্গাপুরের বদনাম করতে চায়? এসি বাসে চেপে কলকাতা থেকে আসা সিপিএম-নকশালদের মদতপুষ্ট ‘অভয়া মঞ্চ’ এবং স্থানীয় সিপিএম বনাম বিজেপিদের টানাহেঁচড়া। কাকে নিয়ে বলুন তো? নির্যাতিতার বাবাকে নিয়ে।’’

ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্বস্তিতে বিজেপিও। পদ্মশিবিরের নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “কে কাকে টানাটানি করল, সে দিকে নজর না দিয়ে যারা দোষ করেছে, তাদেরকে তাড়াতাড়ি পুলিশকে ধরতে বলুন। দেড় কিলোমিটার রাস্তাতে কোন পথবাতি নেই, অন্ধকার থাকে। কোন সিসিটিভি নেই। কেন? সেটা দেখুন জেলার সভাপতি হিসেবে।” অন্য দিকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্‌স ফোরাম’-এর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, তারা এ নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চায়নি। চিকিৎসক সংগঠনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, বিষয়টি অনভিপ্রেত। এটি হওয়া উচিত ছিল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.