ঘটল না অঘটন! বাগে পেয়েও পারলেন না বাংলাদেশের বাঘিনিরা, নাইটের ব্যাটে জয় ছিনিয়ে নিল ইংল্যান্ড

মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপে অঘটন ঘটাতে পারল না বাংলাদেশ। চার বারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বাগে পেয়েও জিততে পারল না বাংলাদেশ। গুয়াহাটির ২২ গজে বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে অসহায় দেখাল ন্যাট সিভার ব্রান্টের দলকে। তবু বাঘিনিদের বিরুদ্ধে চাপের মুখে সিংহিদের জয় ছিনিয়ে আনল হেথার নাইটের ঠান্ডা মাথার ৭৯ রানের ইনিংস। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ করে ১৭৮ রান। জবাবে ইংল্যান্ড ৪৬.১ ওভারে করল ৬ উইকেটে ১৮২ রান। এ দিনের ৪ উইকেটে জয়ের ফলে ব্রান্টেরা পয়েন্ট টেবলে হরমনপ্রীত কৌরদের টপকে শীর্ষে উঠে এলেন।

টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ব্রান্ট। বাংলাদেশের ব্যাটারেরা খুব ভাল কিছু করতে পারেননি। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছেন তাঁরা। তার মাঝেই তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ওপেনার শারমিন আখতার এবং চার নম্বরে নামা শোভনা মোস্তারি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শারমিন ৫২ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন। মারেন ৬টি চার। শোভনা ছিলেন বেশি জমাট। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১০৮ বলে ৬০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। ৮টি চার মেরেছেন তিনি। তবে বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন ন’নম্বরে ব্যাট করতে নামা রাবেয়া খান। ২৭ বলে তাঁর ৪৩ রানের আগ্রাসী ইনিংস বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরায়। ৬টি চার এবং ১টি ছক্কা মারেন তিনি। বাংলাদেশের আর কোনও ব্যাটার অবশ্য বলার মতো রান করতে পারেননি। এই তিন জন ছাড়া দু’অঙ্কের রান কেবল শোরনা আখতারের ১০।

ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার সোফি একলেস্টোন ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২৮ রানে ২ উইকেট চার্লি ডিনের। ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন অ্যালিস ক্যাপসি। ৩৩ রানে ২ উইকেট লিনসে স্মিথের। লরেন বেল ১ উইকেট নিয়েছেন ২৮ রান খরচ করে।

জয়ের জন্য ১৭৯ রান তাড়া করতে নেমে সমস্যা পড়ে ইংল্যান্ডও। ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় ইংরেজরা। তবে ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন অভিজ্ঞ হেথার নাইট। তাঁর ব্যাটে ভর করেই লড়াই করল ইংল্যান্ড। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছে ইংল্যান্ডও। দলীয় ২৯ রানের মধ্যেই আউট হয়ে যান দুই ওপেনার ট্যামি বিউমন্ট (১৩) এবং অ্যামি জোন্স (১)। দু’জনকেই আউট করেন মারুফা আখতার। তৃতীয় উইকেটে নাইটের সঙ্গে জুটি বাধেন অধিনায়ক ব্রান্ট। তিনি খেলেন ৪১ বলে ৩২ রানের ইনিংস। তিনি আউট হতে আবার ভাঙন শুরু হয় ইংল্যান্ডের ইনিংসে। পর পর আউট হয়ে যান সোফিয়া ডাঙ্কলে (শূন্য), এমা ল্যাম্ব (১)। এ সময় বাংলাদেশের ফাহিমা খাতুন, সঞ্জিদা আখতারের বল খেলতে সমস্যা পড়ছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটারেরা। নাইটকে কিছুটা সঙ্গ দেন ক্যাপসি (২০)। নাইট অবশ্য ২২ গজের এক প্রান্তে লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। ১৫০টি ম্যাচের অভিজ্ঞতা দিয়ে সব চাপ শুষে নেন তিনি। ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তাঁকে চাপের মুখে সঙ্গ দিলেন ডিন। সপ্তম উইকেট তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ৭৯ রান। নাইট শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৭৯ রানে। তাঁর ব্যাট থেকে এল আটটি চার এবং ১টি ছক্কা। ডিন ২টি চারের সাহায্যে ৫৬ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকলেন।

বাংলাদেশের সফলতম বোলার ফাহিমা ১৬ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ২৮ রানে ২ উইকেট মারুফার। এ ছাড়া ২৪ রানে ১ উইকেট সঞ্জিদার। এর আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি এক দিনের ম্যাচ এবং চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। প্রতিটি ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে প্রথম জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করলেন নিগারেরা।

ভারত এবং ইংল্যান্ড দু’দলই দু’টি করে ম্যাচ খেলে ৪ পয়েন্ট পেয়েছে। তবে নেট রান রেটে এগিয়ে ব্রান্টেরা। ইংল্যান্ডের নেট রান রেট ১.৭৫৭। অন্য দিকে হরমনপ্রীতদের নেট রান রেট ১.৫১৫। বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবলে ভারতকে টপকে শীর্ষে উঠে এল বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.