‘দোকানদার নাকি’! ট্রাম্পকে বিরল খনিজ দেখাতে গিয়ে নিজের দেশেই কটাক্ষের শিকার পাক সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ নিজেদের কাজের জন্য নিজের দেশেই সমালোচিত হলেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাকিস্তানের বিরল খনিজ পদার্থ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই ছবি হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি পাক পার্লামেন্টে বিরোধীরা সেই ছবি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন সেনাপ্রধানকে। প্রধানমন্ত্রী শরিফের ভূমিকা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির নেতা আইমল ওয়ালি খানের এই সংক্রান্ত বক্তব্যের ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।

মুনিরকে ‘দোকানদার’ বলে কটাক্ষ করেছেন আইমল। দাবি, কোনও দোকানি তাঁর দোকানের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস বিক্রির আগে খরিদ্দারকে যে ভাবে দেখান, ট্রাম্পকে মুনিরের খনিজ দেখানোর ভঙ্গির সঙ্গে তার মিল রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশের সেনাপ্রধান একটা ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাতে বিরল খনিজ ভরে নিয়েছেন। কী মজার বিষয়! এটা উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কোন দেশের সেনাপ্রধান এমন বিরল খনিজের ব্রিফকেস নিয়ে ঘোরেন? যেন বড় কোনও দোকান। দোকানদার বড় চকচকে জিনিস খরিদ্দারকে কিনতে বলছেন এবং পাশ থেকে ম্যানেজার তা দেখছেন।’’

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, মুনিরের হাতে একটি কাঠের বাক্স। তাতে পাথরের মতো দেখতে কিছু পদার্থ রয়েছে। সামনে থেকে মন দিয়ে ট্রাম্প সেগুলি দেখছেন এবং মুনির আঙুলের নির্দেশ করে তাঁকে পাথরগুলি সম্পর্কে কিছু বোঝাচ্ছেন। পাশ থেকে হাসিমুখে ওই পাথরের দিকেই তাকিয়ে আছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এই ছবি ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ও নির্মাণসংস্থা ফ্রন্টিয়ার ওয়র্ক্‌স অর্গানাইজ়েশন সম্প্রতি আমেরিকার স্ট্র্যাটেজিক মেটাল্‌স-এর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পাকিস্তানে বিরল খনিজের অবস্থান এবং প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিতে তার ব্যবহার সম্পর্কে যৌথ ভাবে কাজ করবে এই দুই সংস্থা। সেই সূত্রেই ট্রাম্পকে খনিজ দেখাচ্ছিলেন মুনির।

কোন আইনে সেনাপ্রধান হয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে পাকিস্তানের খনিজ পদার্থ দেখাচ্ছেন মুনির? সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে পার্লামেন্টে। আইমল একে ‘স্বেচ্ছাচার’ বলে কটাক্ষ করেছেন এবং জানিয়েছেন, গণতন্ত্রে এটা হতে পারে না।

কিছু দিন আগে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন মুনির এবং শরিফ। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁরা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। এই নিয়ে গত পাঁচ মাসে মুনির তিন বার আমেরিকায় গেলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.