‘অসত্য দাবি করেছেন, ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবেন’, নেটো প্রধানকে কেন নিশানা করল নয়াদিল্লি?

আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর প্রধান মার্ক রুটের বিরুদ্ধে সরাসরি মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলল ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে সম্প্রতি ফোনে আলোচনা করেছেন বলে রুট যে দাবি করেছিলেন, তা সরাসরি খারিজ করেছে নয়াদিল্লি। সেই সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে নেটো প্রধানকে সতর্কবার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘তথ্যগত ভাবে ভুল এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করবেন না। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।’’

রুটে বৃহস্পতিবার দাবি করেছিলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন, তাতে কাজ হচ্ছে। ভারত চাপ দিচ্ছে রাশিয়াকে। তিনি জানান, ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করায় রাশিয়ার উপর তার ‘বড় প্রভাব’ পড়ছে। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে রুটে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভারতের উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর বড় প্রভাব পড়ছে রাশিয়ায়। দিল্লি থেকে পুতিনকে ফোন করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ইউক্রেন নিয়ে প্রশ্ন করছেন। ইউক্রেন সম্বন্ধে পুতিনের অবস্থান জানতে চাইছেন বার বার। কারণ, শুল্ক চাপানো হয়েছে ভারতের উপর।’’

মোদী এবং পুতিন ফোনে ইউক্রেনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে দাবি করে নেটো প্রধান জানান, এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ইউক্রেন সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সাউথ ব্লকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হল, ‘‘নেটো প্রধানের বক্তব্য তথ্যগত ভাবে ভুল এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনও পর্যায়েই প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে এমন কোনও কথোপকথন হয়নি।’’ প্রসঙ্গত, রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন ট্রাম্প। দাবি করেছেন, ভারত এবং চিন রাশিয়া থেকে তেল কেনায়, সেই অর্থের জোরে পুতিন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। নয়াদিল্লি অবশ্য এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। জানিয়েছে, ভারতের বাণিজ্যনীতি স্থির হয় আন্তর্জাতিক বাজারদর এবং জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। অন্যান্য দেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও কেন তাদের উপর কোনও শাস্তিমূলক শুল্ক চাপায়নি হোয়াইট হাউস, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বস্তুত, ভারতের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক চাপালেও রুশ তেলের আরও বড় গ্রাহক চিনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি ওয়াশিংটন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.