স্নাতকস্তরে রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূরণ হল ৩০ শতাংশেরও কম আসন, শিক্ষা দফতর অবশ‍্য ‘বিস্মিত’ নয়!

দু’দফায় কাউন্সেলিংয়ের পরেও রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ফাঁকা রয়ে গেল স্নাতকস্তরের বহু আসন। ভর্তি হল ৩০ শতাংশের কম। শিক্ষা দফতরের সূত্র অবশ্য বলছে, আসন ভর্তির এই অঙ্ক এ বারের পরিস্থিতিতে তাঁদের কাছে আদৌ অপ্রত্যাশিত নয়।

চলতি বছরে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তির জন্য অভিন্ন পোর্টাল চালু করা হয়েছিল জুন মাসে। দু’দফায় কাউন্সেলিংয়ের আয়োজন করা হয়। প্রথম দফার কাউন্সেলিংয়ের জন্য নাম নথিভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৮ জুন থেকে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে প্রথম দফায় কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ২ লক্ষ ৩০ হাজার ৭০৪ জন পড়ুয়া।

প্রথম দফার কাউন্সেলিংয়ের শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ অগস্ট। কিন্তু ওবিসি জটের কারণে দিন পরিবর্তন করা হয়। জানানো হয় ক্লাস শুরু হবে ৭ অগস্ট। এর পর ফের ওবিসি মামলার কারণে ভর্তির প্রক্রিয়া থমকে যায়। সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে প্রথম দফার ক্লাস শুরু হয় ২৯ অগস্ট থেকে।

কলেজে ফাঁকা আসনগুলি এর পর আপগ্রেডেশন রাউন্ডে চলে যায়। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং। এই দফায় পুরনোরা ছাড়াও নতুন করে আবেদন করেন ৮৯৮৩ জন পড়ুয়া। দ্বিতীয় দফার শেষে স্নাতকে মোট ৩৯ হাজার ৭৩ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন।

শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং মিলিয়ে পোর্টালে মোট ৪ লক্ষ ২১ হাজার ৩০১ পড়ুয়ার আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭৭৭ জন। অর্থাৎ মোট আসনের ২৮.৮১ শতাংশ পূরণ হয়েছে। গত বছর ভর্তির সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষ ৪৪ হাজারের মতো।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফার জন্য চলতি মাসের ২৩, ২৪ এবং ২৫ তারিখ কলেজগুলিতে সশরীরে নথি যাচাইয়ের কথা ছিল। ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৫ অগস্ট থেকে। কিন্তু হঠাৎই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার সমস্ত প্রক্রিয়াই থমকে যায়। তার উপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি তরফে ২৪ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর সমস্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর পর পড়ে যাচ্ছে দুর্গাপুজোর ছুটি। ‌

শিক্ষকমহলের একাংশের দাবি, যত ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তার তুলনায় আসন সংখ্যা অনেকটা বেশি। বর্তমানে রাজ্যে আসন সংখ্যা ৯ লক্ষ ৩৬ হাজার ২১৫। তাদের মতে, এমনিতেই চিরাচরিত বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহ কমছে পড়ুয়াদের। তার উপর এ বছর সংরক্ষণ জটিলতায় বহু ছাত্র-ছাত্রী অন্য রাজ্যে ভর্তি হয়েছেন পড়াশোনার জন্য। তার ফলে ৭০ শতাংশ আসনই খালি থেকে গেল।

উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘‘ওবিসি জটিলতার কারণে এ বছর ভর্তি প্রক্রিয়া যথেষ্ট বিলম্ব হয়েছে। বহু মেধাবী পড়ুয়া অন্য রাজ্যে বা অন্য কোন‌ও কোর্সে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন। তবে আমরা যা ভেবেছিলাম তার থেকে বেশ খানিকটা বেশি আসনই ভর্তি হয়েছে।’’

জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীপুজোর পর কলেজগুলিতে পড়ুয়াদের নথি যাচাই করা হবে। সম্ভাব্য তারিখ ৯ এবং ১০ অক্টোবর। এর পর শুরু হবে দ্বিতীয় দফায় ভর্তি নেওয়া পড়ুয়াদের ক্লাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.