টেট উত্তীর্ণ না-হলে পরীক্ষায় বসতে হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তৎপর পর্ষদ, তথ্য তলব জেলায় জেলায়

শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে। শুধু তা-ই নয়, পদোন্নতির জন্যও টেট উত্তীর্ণ বাধ্যতামূলক! প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এমনই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশের পরই তৎপর হল এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে এ বার তারা জেলায় জেলায় কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য চেয়ে পাঠাল।

সোমবার পর্ষদের তরফে নির্দেশিকা জারি করে সব জেলার প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল (ডিপিএসসি)-এর চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কর্মরত শিক্ষকদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। সময় দেওয়া হয়েছে ১৫ দিন। সেই সময়ের মধ্যে তথ্য জমা দিতে হবে পর্ষদের কাছে। কী তথ্য চাওয়া হয়েছে তা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলায় কত জন শিক্ষককে টেট দিতে হবে? সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মধ্যে কে কবে অবসর নেবেন? কবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন? এই সব কিছুই বিস্তারিত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যে প্রায় দেড় লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা টেট উত্তীর্ণ নন, তাঁদের সকলকেই ফের নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে হবে। চলতি মাসে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, চাকরি চালিয়ে যেতে বাধ্যতামূলক ভাবে টেট উত্তীর্ণ হতে হবে। শুধু তা-ই নয়, পদোন্নতির ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ প্রযোজ্য। আগামী দু’বছরের মধ্যে টেট উত্তীর্ণ হতে হবে কর্মরত শিক্ষকদের।

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছিল, যে শিক্ষকেরা টেট উত্তীর্ণ হবেন না, তাঁরা চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন বা অন্তিম সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। নির্দেশে বলা হয়, যে সব শিক্ষক আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে অবসর নেবেন, তাঁদের টেট উত্তীর্ণ না-হলেও চলবে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইন এবং এনসিটিই রুলে কোথাও বলা নেই। তা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দিয়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছিলাম। আজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কিছুটা পদক্ষেপ করলেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এখনও চুপ করে বসে আছে। আমরা দ্রুত পদক্ষেপের আশা করছি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.