ভারতের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ পরনির্ভরতা! মোদীর মন্তব্যের নেপথ্যে ট্রাম্পের শুল্কনীতি না নতুন ভিসানীতির চাপ?

ভারতের আসল শত্রু কী, তা চিহ্নিত করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আত্মনির্ভর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে মোদী জানালেন, ভারতের সবচেয়ে বড় শত্রু অন্য দেশের উপর নির্ভরতা। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য ভারতের পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। শুক্রবারই এইচ-১বি ভিসার জন্য মোটা টাকা ধার্য করার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। এই ভিসার সব থেকে বেশি সুবিধা পেয়ে থাকেন ভারতীয়রাই। আমেরিকার তরফে এই দ্বিমুখী চাপের আবহে মোদীর ‘পরনির্ভরতা’ সংক্রান্ত মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

গুজরাতের ভাবনগরের জনসভা থেকে মোদী বলেন, “বিশ্বে আমাদের বড় কোনও শত্রু নেই। আমাদের একমাত্র প্রকৃত শত্রু হল অন্য দেশের উপর নির্ভরতা। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু।” একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংযোজন, আমাদের প্রত্যেককে এক সঙ্গে ভারতের এই শত্রুকে হারাতে হবে।” বক্তৃতায় আত্মনির্ভর হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতি এবং উন্নতির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের আত্মনির্ভর হওয়া উচিত।” একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংযোজন, যদি আমরা এখনও অন্যদের উপর নির্ভরশীল থেকে যাই, তা হলে আমাদের আত্মসম্মানে ঘা লাগবে। হাজার দুঃখের একটাই ওষুধ। আর তা হল আত্মনির্ভর ভারত।”

ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে ভারত। ভারতের বহু পণ্য আমেরিকার বাজার হারাতে চলেছে, এমনটা ধরে নিয়ে অন্য বিকল্পও ভাবছে নয়াদিল্লি। এই আবহে মোদী মার্কিন নির্ভরতা কমানোর বার্তা দিলেন কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর মুখে একাধিক বার ‘আত্মনির্ভরতা’র কথা শোনা গেলেও বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি বিশেষ বার্তা বহন করছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবারই ট্রাম্প আরও একটি নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেন। তাতে বলা হয়েছে, এ বার থেকে এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির কাছ থেকে বছরে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) করে নেবে সরকার। ‘এইচ-১বি’ ভিসা একটি অ-অভিবাসী ভিসা। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা আমেরিকায় থেকে সেখানকার সংস্থার হয়ে কাজ করেন। ট্রাম্প সরাসরি এই উপায় বন্ধ করে দিচ্ছেন না। তবে এমন মোটা অঙ্কের মূল্য তিনি ধার্য করলেন, যাতে এই ধরনের কর্মীদের আর নিয়োগ করতে চাইবে না কোনও সংস্থা। এর ফলে মার্কিন সংস্থায় কর্মরত ভারতের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.