আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা হল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের। শুক্রবার রাতে বেশ কিছুক্ষণ ফোনে কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। তাঁদের মধ্যে কী নিয়ে কথা হয়েছে, এখনও সরকারি ভাবে তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে বাণিজ্যিক সংঘাত প্রশমন এবং আমেরিকায় টিকটক চালু রাখার জন্য একটি চুক্তির বিষয়ে তাঁদের দু’জনের কথা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউসের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। শুক্রবার জিনপিঙের সঙ্গে ফোনে কথার পরে ট্রাম্প জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় তাঁরা বৈঠক করবেন। আগামী বছরের গোড়ায় বেজিঙে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বস্তুত, জিনপিঙের সঙ্গে ফোনালাপের আগে গত বৃহস্পতিবারই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, টিকটক নিয়ে তাঁরা কথা বলতে পারেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘চুক্তি চূডা়ন্ত করার কাছাকাছি আমরা পৌঁছে গিয়েছি।’’ এর আগে গত ৪ জুন চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিঙের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছিল ট্রাম্পের। সে সময় পারস্পরিক শুল্ক আরোপ ঘিরে ওয়াশিংটন-বেজিং টানাপড়েন চরমে উঠেছিল। ট্রাম্প-জিনপিং সেই ফোনালাপের পরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ২৭ জুন সই হয়েছিল চুক্তি। যদিও এখনও বাণিজ্যিক লেনদেন নিয়ে কিছু মতবিরোধ রয়েছে দু’দেশের। তবে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে জরিমান-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও চিনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘিরে মার্কিন জনতারই একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এখনও। এ ছাড়া ভারতের মতো বন্ধু দেশের উপর ৫০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক বসানো নিয়ে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা প্রশ্ন তুলেছে ইতিমধ্যেই। এই পরিস্থিতিতে জিনপিঙের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত রবিবার স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে বৈঠকে বসেছিলেন আমেরিকা এবং চিনের আধিকারিকেরা। সেই বৈঠক ভাল হয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বৈঠক নিয়ে একটি পোস্ট করেন। লেখেন, ‘‘ইউরোপে অনুষ্ঠিত আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে হওয়া বাণিজ্য বৈঠক ভাল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’’
সেই সঙ্গে টিকটকের নাম না করে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ বিষয়ে শীঘ্রই চুক্তিতে আসবে দুই দেশ। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘একটি ‘নির্দিষ্ট’ কোম্পানির সঙ্গেও একটি চুক্তি হয়েছে, এতে আমাদের দেশের তরুণেরা খুশি হবেন।’’ গত বছর টিকটক নিষিদ্ধ করে মার্কিন কংগ্রেসে একটি আইন পাশ হয়েছিল। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে ৭৫ দিনের জন্য তা স্থগিত করে দেন। পরে সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয় আরও ৯০ দিন। এ বার কি তাঁর সৌজন্যে আমেরিকায় প্রবেশাধিকার পাবে টিকটক? ছ’দফা আলোচনার পরে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন বাণিজ্যচুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নতুন সমঝোতা নিয়ে ট্রাম্প-জিনপিং আলোচনা নরেন্দ্র মোদীর সরকারের উপর চাপ বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।