আদালতে ধাক্কা ট্রাম্পের, এপস্টিন কাণ্ডে ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর বিরুদ্ধে লক্ষ কোটির মামলা খারিজ

কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে ১৫০০ কোটি ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ৩২ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণের মামলা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু শুক্রবার আদালত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মানহানি মামলা সরাসরি খারিজ করে দিল!

মিডল ডিস্ট্রিক্ট অফ ফ্লোরিডার ফেডারেল বিচারক স্টিভেন মেরিডে রায় ঘোষণা করে বলেছেন, ‘‘যে যুক্তি দিয়ে ট্রাম্প প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনেছেন, তা ফেডারেল আইনের পরিপন্থী।’’ প্রসঙ্গত, গত সোমবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে ট্রাম্প লেখেন, “অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমি ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর বিরুদ্ধে ১৫০০ কোটি ডলারের মানহানির মামলা করছি। ওটা আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে ফালতু খবরের কাগজ। ক্রমশ ওই সংবাদপত্র বিপ্লবী বাম ডেমোক্র্যাট পার্টির মুখপত্র হয়ে উঠেছে।” ট্রাম্পের এই পোস্ট করার কিছু সময় পরেই ফ্লরিডায় ওই সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় তাঁর আইনজীবীর তরফে।

এর আগে গত জুলাই মাসে আর এক মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে ৮৬ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন ট্রাম্প। ওই সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, এপস্টিনকে নারীদেহের অবয়ব এঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন একদা তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ট্রাম্প। সম্প্রতি ছবি সম্বলিত সেই চিঠি ফাঁস হয়ে যায়। দাবি করা হয়, ২০০৩ সালে এপস্টিনের ৫০তম জন্মদিনে লেখা ওই চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছিলেন, “শুভ জন্মদিন। তোমার প্রতিটা দিন যেন ভিন্ন অথচ দুর্দান্ত ভাবে গোপন হয়ে ওঠে।” চিঠির নীচে ট্রাম্পের স্বাক্ষরও রয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

বিতর্কিত চিঠি প্রকাশ হওয়ার আগে গত জুলাই মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন যে, “আমি জীবনে কোনও দিন ছবি আঁকিনি। মেয়েদের ছবি তো আঁকিইনি। এগুলো আমার ভাষা বা শব্দই নয়।” এপস্টিনের কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসার আগেই তিনি বন্ধুত্ব ছিন্ন করেন বলেও দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। এপস্টিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে এক জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন ভার্জিনিয়া জিফরে নামের এক মহিলা। মামলার নথিতে এপস্টিন-ঘনিষ্ঠদের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। ইতিমধ্যে একাধিক বার জল্পনা শোনা গিয়েছে, ওই ফাইলে নাম রয়েছে বিল ক্লিন্টন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্টিফেন হকিং থেকে মাইকেল জ্যাকসন-সহ অনেক খ্যাতনামীরা। বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা বহু দিন ধরেই এপস্টিন ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলছেন। বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভ্‌সে আলোচনা না হলেও বিষয়টি নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে হাউসের ওভারসাইট কমিটিতে। ওই কমিটিতে রয়েছেন বিরোধী ডেমোক্রেটিক দলের সদস্যেরাও। তাঁরাই ওই বিতর্কিত চিঠি প্রকাশ্যে এনে এপস্টিনকে বলা ট্রাম্পের ‘গোপন’ কথা প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.