তিন বছর পর ভারতের পড়শি দেশকে ফের ঋণ দেওয়া শুরু করল চিন! এক দফায় ৪ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর, উদ্দেশ্য কী

তিন বছর পর ভারতের পড়শি দেশকে ফের ঋণ দেওয়া শুরু করল চিন। এক দফায় মঞ্জুর করা হল চার হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ। এত দিন ধরে যে প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল, তা আবার শুরু হল। ওই দেশে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যেই ঋণ দেওয়া হচ্ছে, দাবি বেজিঙের।

ভারতের দক্ষিণের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি তীব্র অর্থসঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দায় দীর্ঘ দিন ভোগার পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে কলম্বো। বছর তিনেক আগেই দেশটি প্রায় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। তখন থেকে শ্রীলঙ্কাকে অর্থসাহায্য করা বন্ধ করে দেয় চিন। তিন বছর পর ফের ঋণ মিলল। শ্রীলঙ্কার জন্য সম্প্রতি ৪.৩ হাজার কোটি টাকা (৫০ কোটি ডলার) ঋণ মঞ্জুর করেছে বেজিং। সেই টাকায় দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকা হাইওয়ে প্রকল্পের কাজ আবার শুরু হয়েছে। বুধবার সেই প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরুর অনুষ্ঠান থেকে চিনের ব্যাঙ্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর সঙ্গে ক্যান্ডি শহরের সংযোগকারী সেন্ট্রাল এক্সপ্রেসওয়ের ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। কিন্তু ২০২৩ সালে অর্থের অভাবে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তত দিনে এগিয়েছিল মোট কাজের মাত্র এক তৃতীয়াংশ। এই হাইওয়ে তৈরি হয়ে গেলে শ্রীলঙ্কার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে যোগাযোগ আরও দ্রুত এবং সহজ হবে। ফলে শ্রীলঙ্কার মানুষও এই হাইওয়ের দিকে তাকিয়ে। চিনের সাহায্য আসার পর এ বার হাইওয়ে তৈরির কাজ ২০২৮ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে শেষ করার সংকল্প নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

বেশ কিছু শর্তে শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছে চিনের এক্সিম ব্যাঙ্ক। প্রেসি়ডেন্ট দিশানায়েকে বলেছেন, ‘‘বিশেষজ্ঞেরা বলেন, কোনও দেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হলে উন্নয়নের খাতায় এক দশক পিছিয়ে যায়। কিন্তু আমি নিশ্চিত, আমরা এই সময়সীমাকে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারব। এ বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি হবে। ২০২৬ সালে আমাদের বাজেটের লক্ষ্য হবে সঙ্কট থেকে পুরোপুরি মুক্তি।’’

অর্থনৈতিক মন্দার মুখে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) ২৯০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য করেছে শ্রীলঙ্কাকে। এর ফলে ২০২৪ সালে দেশটির অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হয়েছে পাঁচ শতাংশ। দেশটির অর্থ মন্ত্রকের তথ্য বলছে, চিন এখনও ৪৯০ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছ থেকে পায়। বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। এখনও তা পরিশোধ হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.