‘দেশবাসীর সেবা করতে এসেছি, ক্ষমতার স্বাদ নিতে নয়’, দায়িত্ব নিয়েই আর কী ঘোষণা করলেন নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী

মানুষকে সেবা করার জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা, ক্ষমতায় টিকে থাকতে নয়। রবিবার নিজের দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে এমনটাই জানালেন নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কী। জাতির উদ্দেশে প্রথম বার ভাষণ দিয়ে তিনি এ-ও জানালেন, যুবসমাজের আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের ‘শহিদের’ মর্যাদা দেওয়া হবে। ক্ষমতায় কত দিন থাকবেন, সেই সময়সীমাও জানিয়ে দিলেন কার্কী। তিনি জানালেন, সময় পেরিয়ে গেলে মানুষের সমর্থন ছাড়া তিনি গদি আঁকড়ে থাকবেন না।

যুবসমাজের বিক্ষোভের জেরে পতন হয় নেপাল সরকারের। গত শুক্রবার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয় সুশীলাকে। তিনি নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ছিলেন। রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন সুশীলা। কাঠমান্ডুর সিংহ দরবার হল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। কিন্তু গণবিক্ষোভের সময় ওই ভবনের সিংহভাগ অংশ প্রতিবাদীদের লাগানো আগুনে পুড়ে গিয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরেই আপাতত প্রধানমন্ত্রীর দফতর করা হয়েছে। রবিবার সেই দফতরে বসেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন কার্কী।

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। আমি এবং আমার দল এখানে ক্ষমতার স্বাদ নিতে আসিনি। আমরা ছ’মাসের বেশি পদে থাকব না। নতুন পার্লামেন্টকে দায়িত্ব দিয়ে দেব। আপনাদের সমর্থন ছাড়া থাকব না।’’ এর পরে তিনি নেপালের পুনর্গঠনেরও ডাক দেন। সুশীলার কথায়, ‘‘নেপালকে আবার গড়ে তোলার জন্য সমস্ত অংশীদারের এগিয়ে আসা উচিত। আমরা হাল ছাড়ব না। আমাদের দেশকে পুনরুদ্ধার করতে একসঙ্গে কাজ করব।’’ রবিবার মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ করার কথা রয়েছে সুশীলার।

প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার নেপালে সরকার পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন কেপি ওলি। সাময়িক ভাবে তার পর নেপালের ক্ষমতা গিয়েছিল সেনার হাতে। দেশের বিক্ষোভরত তরুণ প্রজন্ম প্রাথমিক ভাবে সুশীলা কার্কীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সুশীলার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলে তিনি এই প্রস্তাবের পক্ষে অন্তত এক হাজার লিখিত স্বাক্ষর দাবি করেন। স্বাক্ষর উঠেছিল আড়াই হাজারের বেশি। সুশীলা ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। নেপালে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.